Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
শেষ ওভারে ২৯ রান: ৬, ৬, উইকেট, ৬, ওয়াইড, ৪, ৬

‘শ্রেয়সের ভয়ডরহীন ক্রিকেটই হারিয়ে দিল নাইটদের’

নতুন অধিনায়ককে প্রাক্তন অধিনায়কের কুর্নিশ! এ ভাবেই দেখতে হবে ব্যাপারটা। এ বারের আইপিএলে ছন্দে নেই বলে সরে যেতে হয়েছে গম্ভীরকে।

নায়ক: গৌতম গম্ভীরের জায়গায় তাঁকে নতুন অধিনায়ক বেছে নিয়েছে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। নেতা হিসেবে প্রথম ম্যাচেই দুরন্ত শ্রেয়স আইয়ার। করলেন ৪০ বলে ৯৩ নট আউট। ছবি: এএফপি

নায়ক: গৌতম গম্ভীরের জায়গায় তাঁকে নতুন অধিনায়ক বেছে নিয়েছে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। নেতা হিসেবে প্রথম ম্যাচেই দুরন্ত শ্রেয়স আইয়ার। করলেন ৪০ বলে ৯৩ নট আউট। ছবি: এএফপি

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

শ্রেয়স আইয়ার যখন অপরাজিত ইনিংস খেলে বেরিয়ে আসছেন, গৌতম গম্ভীরকে দেখলাম উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন।

নতুন অধিনায়ককে প্রাক্তন অধিনায়কের কুর্নিশ! এ ভাবেই দেখতে হবে ব্যাপারটা। এ বারের আইপিএলে ছন্দে নেই বলে সরে যেতে হয়েছে গম্ভীরকে। শুধু নেতৃত্ব থেকেই নয়, প্রথম একাদশ থেকেও। কিন্তু একটা কথা বলতেই হবে। গম্ভীরের মানসিকতার কোনও তুলনা হয় না। তবে শুক্রবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে শ্রেয়স যে ইনিংসটা খেললেন, তাতে ওকে কুর্নিশ না জানিয়ে কোনও উপায় ছিল না।

গম্ভীরের জায়গায় দিল্লির নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়া হয়েছে শ্রেয়সের হাতে। নতুন দায়িত্ব পেয়েই দিল্লি অধিনায়ক করে গেলেন ৪০ বলে অপরাজিত ৯৩ রান। মারলেন দশটি ছয় এবং তিনটি চার। শ্রেয়সের হাতে অনেক স্ট্রোক আছে। কিন্তু এ রকম আগ্রাসী ব্যাটিং করতে ওঁকে আগে কখনও দেখিনি।

শুক্রবার ফিরোজ শা কোটলা শাসন করে গেল দুই মুম্বইকরের ব্যাট। দু’জনেই মুম্বই ব্যাটিং ফ্যাক্টরি থেকে বেরিয়েছে। প্রথম জন শ্রেয়স হলে দ্বিতীয় জনের নাম পৃথ্বী শ। এই নিয়ে দ্বিতীয় আইপিএল ম্যাচ খেলছেন পৃথ্বী। কিন্তু ব্যাটিং দেখে সেটা বোঝাই যায়নি। ৪৪ বলে ৬২ করলেন। মারলেন সাতটি চার, দু’টি ছয়। শ্রেয়স ইতিমধ্যেই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। প্রৃথ্বীও একদিন পাবেন।

শুরুর দিকে পৃথ্বীর ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, শিরোনামে হয়তো এই ছেলেটাই চলে আসবেন। কিন্তু ওঁকে পিছনে ফেলে দিলেন শ্রেয়স। এই দু’জনের দাপটে দিল্লি তুলে ফেলে ২১৯ রান। এ বারে দিল্লির সর্বোচ্চ স্কোর। যে রান তাড়া করতে নেমে কলকাতা নাইট রাইডার্স থামল ১৬৪-৯ স্কোরে। ম্যাচ হারল ৫৫ রানে।

কোটলায় দিনটা ছিল তারুণ্যের। কথনও পৃথ্বী, কখনও শ্রেয়স, কখনও বা আবেশ খান, কখনও বা শুভমান গিল। সবাই কিছু না কিছু ভাবে নজর কাড়লেন। কেকেআর হারলেও গিলের ব্যাটিং আমার ভাল লেগেছে। তবে দু’দলের মধ্যে তফাত করে দিল দিল্লির ভয়ডরহীন ক্রিকেট। আসলে শ্রেয়সদের ওপর কোনও চাপই ছিল না। ওঁদের কিছু হারানোরও ছিল না। একেবারে চাপমুক্ত মনে খেলে গেলেন। কেকেআরকে একটা বলের জন্যও ম্যাচে ফিরতে দেয়নি দিল্লি।

ব্যাটিংয়ের সময়ও দিল্লির একটা জুটি খেলেছিল। বোলিংয়ের সময়ও সে রকম একটা জুটি দীনেশ কার্তিকদের ওপর চাপ রেখে গেল। অমিত মিশ্র এবং আবেশ খানের জুটি। স্পিন এবং পেসের জুটি। বর্ষীয়ান লেগস্পিনার অমিত চার ওভারে মাত্র ২৩ রান দিয়ে দু’উইকেট নিলেন। তাতে আমি অবাক নই। প্রচুর আইপিএল ম্যাচ খেলেছেন অমিত। জানেন, কী ভাবে চাপ সামলে খেলতে হয়। কিন্তু আবেশ তো নতুন। আন্দ্রে রাসেলের আক্রমণের মুখে মাথা ঠান্ডা রেখে ওঁকে আউট করলেন। চার ওভারে ২৯ রান দিয়ে নিলেন দু’টো উইকেট। বছর দু’য়েক আগে বাংলার সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে একটা ম্যাচে এই তরুণ পেসারকে দেখেছিলাম। তখনই কিন্তু মনে হয়েছিল ছেলেটা লম্বা রেসের ঘোড়া।

কেকেআরের অন্যতম শক্তি স্পিন। কিন্তু কোটলায় শ্রেয়সের তাণ্ডবের সামনে অসহায় দেখিয়েছে কলকাতার তিন স্পিনারকে। পীযূষ চাওলা চার ওভারে ৩৩, কুলদীপ যাদব দু’ওভারে ২২ এবং সুনীল নারাইন তিন ওভারে ৩৫ রান দিলেন। একই দিনে কেকেআরের তিন স্পিনারের এমন দুর্দশা কোনও দিন হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না।

ইনিংসের শেষ দিকে বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন শ্রেয়স। একটা সময় আট বলে আসে পাঁচটা ছয়। নাইট অধিনায়ক কার্তিক শেষ ওভারে বল করতে ডেকেছিলেন নবাগত শিবম মাভিকে। শেষ ওভারের চাপ সামলাতে পারেননি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের পেসার। ওই ওভারে শ্রেয়স তুললেন ২৯ রান। মারলেন চারটে ছয়, একটা চার। শেষ চার ওভারে দিল্লি তুলল ৭৬ রান!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shreyas Iyer IPL 11 IPL 2018 Cricket DD vs KKR
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE