Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ফুটবল ঘিরে বাংলার চোখ ডিজিটালে

ফুটবল-উৎসবে যোগ দিতে বাংলায় আসার আগেই বিশ্ববাসী যাতে জমাটি আবহের আঁচ পেতে পারে, তার জন্য ওয়েবসাইট, ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম— সর্বত্রই ‘বিশ্ব বাংলা’ ব্র্যান্ড ছড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য।

ঝলমলে: যুব বিশ্বকাপ উপলক্ষে আলোয় সেজেছে শহর। ছবি: শৌভিক দে

ঝলমলে: যুব বিশ্বকাপ উপলক্ষে আলোয় সেজেছে শহর। ছবি: শৌভিক দে

অত্রি মিত্র ও সুজিষ্ণু মাহাতো
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:২২
Share: Save:

বাংলাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে ‘বিশ্ব বাংলা’ ব্র্যান্ড তো ছিলই। সেই সঙ্গে যুব বিশ্বকাপের আগমনে এখন সরগরম কলকাতা। রাজ্য সরকারের নতুন স্লোগানও তাই দুইয়ের মিশেলে নজরকাড়া— #বিশ্ববাংলায়বিশ্বকাপ!

সামনে ‘হ্যাশট্যাগ’-এর অর্থ সহজবোধ্য। এই আধুনিক দুনিয়ায় বিপণনের কোনও দরজাই বন্ধ রাখতে চায় না রাজ্য সরকার। সেখানে প্রধান পথই ‘ডিজিটাল’। তাই ইন্টারনেটে জমি দখলে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। লক্ষ্য একটাই— যুব বিশ্বকাপ ফাইনালের রাজ্যকে তার শতাব্দীপ্রাচীন যাবতীয় ঐশ্বর্য-সহ দুনিয়ার সামনে এক ‘ক্লিকে’ হাজির করা। তাই হ্যাশট্যাগ-স্লোগান যেমন আছে, তেমনই আছে শহরজুড়ে বিশ্বকাপের ‘টিজার’। পুজো পর্যন্ত যা ছিল, ‘গৌরবের শহরে গর্বিত আমরা’। বিশ্বকাপের ঢাকে কাঠি পড়তেই তা পাল্টে হয়েছে— ‘এ বার খেলা, জমবে বাংলা’। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা এই টিজার নিয়ে শুক্রবার থেকেই জোর প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে।

ফুটবল-উৎসবে যোগ দিতে বাংলায় আসার আগেই বিশ্ববাসী যাতে জমাটি আবহের আঁচ পেতে পারে, তার জন্য ওয়েবসাইট, ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম— সর্বত্রই ‘বিশ্ব বাংলা’ ব্র্যান্ড ছড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য। বিশ্বকাপের প্রচারে তৈরি হয়েছে আলাদা ওয়েবসাইট। তাতে মিলছে বাংলার ফুটবল, ঐতিহ্য, পর্যটন, খাবারের হদিস। সেই সঙ্গে পুলিশ, চিকিৎসা-সহ জরুরি পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্যও। চাইলে এই ওয়েবসাইট থেকেই খেলার টিকিট কাটতে পারেন দর্শকেরা। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে জোর প্রচারের পাশাপাশি ক্রীড়াপ্রেমীদের আকর্ষণ করতে চলছে নানা প্রতিযোগিতাও।

আরও পড়ুন: ঈশ্বরের আপন দেশে আজ সাম্বা বনাম তিকি তাকা

তৈরি হয়েছে আলাদা ইউটিউব চ্যানেল। আপাতত সেখানে শুধু যুব বিশ্বকাপের প্রচারে দেড় মিনিটের মিউজিক ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তৈরি এই ভিডিও-র গীতিকার ও সুরকার খোদ মমতা। গায়ক পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। ইতিমধ্যেই ওই চ্যানেলে কয়েক হাজার ‘ভিউয়ার’ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নবান্নের কর্তারা। পরে আরও ভিডিও আপলোড করা হবে সেখানে।

এক কর্তার কথায়, ‘‘বিদেশি অতিথিদের বরণ করায় কোনও ফাঁক রাখতে চায় না রাজ্য। একেবারে আন্তর্জাতিক ধাঁচে গোটা প্রচারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে জন্যই ফিফাও অনুমোদন দিয়েছে।’’

এমনিতে ফিফার কোনও ইভেন্টের প্রচার তাদের বেঁধে দেওয়া নকশা অনুযায়ীই করতে হয়। ভারতের অন্য যে সব শহরে খেলা হচ্ছে, তারা সেই মাপকাঠি মেনেই প্রচার করেছে। ব্যতিক্রম শুধু পশ্চিমবঙ্গ। ফিফার সঙ্গে রাজ্যের এমন সমান্তরাল বিপণনের অনুমতি মিলবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ ছিল নবান্নের কর্তাদের। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘নিশ্চিত হতে আমরা প্রচারের নকশা তৈরি করে পাঠিয়েছিলাম ফিফার এখানকার কর্তাদের কাছে। তাঁরা তা পাঠিয়েছিলেন ফিফার সদর দফতরে। সেখানে কলকাতার প্রচার দেখে কর্তারা খুশি।’’

গায়ক-মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলছেন, ‘‘বিশ্বকাপকে ধরে যে বাংলার সংস্কৃতি এবং পর্যটনকে বিশ্বের দরবারে এ ভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়, তা দেখিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিশ্ব বাংলায় বিশ্বকাপ— এই স্লোগানের ছাতার নীচেই সব বিজ্ঞাপন করা হবে।’’ প্রচারের জন্য কয়েকশো হোর্ডিং তো আছেই। সঙ্গে থাকছে ৫০টি এলইডি কাটআউট, ৫০টি ফাইবারের কাটআউট, ৫০টি গেট, ৫০টি পিলার এবং কয়েক হাজার ব্যানার। তা ছাড়া, মেট্রো, বিমানবন্দর, রেল স্টেশনও মুড়ে দেওয়া হবে ‘বিশ্ব বাংলায় বিশ্বকাপ’ দিয়ে। তাতে ফিফার লোগোর পাশেই থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো।

এ বার শুধু খেলা জমার পালা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

FIFA U-17 World Cup Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE