পরামর্শ: শনিবার ভারতের প্র্যাকটিসে আলাদা করে কুলদীপ যাদবকে কোচিং করাচ্ছেন রবি শাস্ত্রী।
নরেন্দ্র হিরওয়ানির শহরে এসে যে একজনও চায়নাম্যান বোলার পাবেন না, তা বোধহয় ভাবতেই পারেননি স্টিভ স্মিথ-রা।
চেন্নাই, কলকাতায় নেমেই যা করেছিল অস্ট্রেলিয়া, এখানে এসেও ঠিক সেভাবেই নেটে দু’একজন স্থানীয় চায়নাম্যান বোলার চেয়েছিল তারা। কিন্তু সারা ইনদওর খুঁজে কোনও চায়নাম্যান বোলার পাওয়া যায়নি।
হিরওয়ানি এখন বোর্ডের স্পিন অ্যাকাডেমির দায়িত্বে। তিনিও শহরে নেই। বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমিতে বোর্ডের দেওয়া দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। তাঁকে ফোন করেও লাভ হয়নি। হিরওয়ানি সাফ জানিয়ে দেন, চায়নাম্যান পাওয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত জনা ছয়েক স্পিনার নিয়েই এ দিন হোলকার স্টেডিয়ামে নেট প্র্যাকটিস শুরু করে দিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-রা। সেই নেট প্র্যাকটিসে একজন বাঁহাতি স্পিনার ছিল বটে, কিন্তু সে চায়নাম্যান নয়। মধ্য প্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তা বললেন, ‘‘আমাদের কাছে অস্ট্রেলিয়া চায়নাম্যান বোলারের জন্য অনুরোধ করেছিল। আমরা হিরু ভাইকে (হিরওয়ানি) জানাই। হিরু বলে দেয়, হবে না। ইনদওরে চায়নাম্যান নেই।’’
চায়নাম্যান না পেয়েও অবশ্য দমে যায়নি অস্ট্রেলিয়া। জনা ছয়েক স্থানীয় স্পিনারকে একসঙ্গে বল করতে বলে শুরু থেকেই চলল তাঁদের স্পিন-যুদ্ধের মহড়া। এই মহড়া যখন চলছে, তখন নেট থেকে একটু দূরে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে রবিবারের ম্যচের ‘প্রিভিউ’ করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব চায়নাম্যান ব্র্যাড হগ। কিন্তু তিনি একবারও স্মিথদের এই মহড়ার দিকে ফিরে তাকালেন না। নিজেদের দেশেরই চায়নাম্যান সম্পদ হাতের কাছে থাকতেও কেন তাঁকে কাজে লাগাচ্ছেন না স্মিথরা? চ্যানেলের এক প্রতিনিধি বললেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ড ওকে সরকারি ভাবে দায়িত্ব না দিলে হগ কেন যেচে সাহায্য করে যাবে?’’
এই সিরিজের টিভি প্রোমোটা মনে পড়ে যেতে পারে। প্রোমোতে ছিল— ‘অজি সব জানতে হ্যায়’। মানে অস্ট্রেলিয়ানরা সবই জানে। কিন্তু শনিবার হোলকার স্টেডিয়ামের নেটে ডেভিড ওয়ার্নারদের দেখে মনে হচ্ছিল, আর কোনও কিছু না জানলেও চলবে। তাঁরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্পিন খেলার মন্ত্র শিখতে। ওয়ার্নারকে অবশ্য ঘূর্ণি সামলাতে হল সাংবাদিক সম্মেলনে এসেও। নিজের দেশের এবং ভারতের সাংবাদিকরাও বারবার তাঁকে খোঁচালেন, স্পিনের বিরুদ্ধে দলের ব্যাটিংয়ের এই ভগ্নদশা কেন? ওয়ার্নার প্রথমে পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘‘কে বলল আমরা ওদের বোলিং বুঝতে পারছি না? দু’একজন হয়তো সিম না দেখে খেলে ফেলছে। স্পিনটা খেলতে গেলে একটা নির্দিষ্ট গেমপ্ল্যান লাগে। শুরুতে ঝটপট উইকেট পড়তে শুরু করলে সেই পরিকল্পনাটাই ভেস্তে যায়।’’ বললেন, ‘‘আইপিএলে আমরা যতই ভারতে এসে ভারতীয় স্পিনারদের খেলে থাকি, এই পরিস্থিতিটায় চাপ অনেক বেশি।’’
ভারতের প্র্যাকটিসে নিজেও হাত ঘুরিয়ে নিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
যখন তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হল যে তাঁরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তখন ওয়ার্নার ফের কিছুটা বিরক্ত হয়েই বললেন, ‘‘কোন দল নিয়ে বিশ্বসেরা হয়েছিলাম, সেটা দেখুন। সেই টিমের ওপর প্রচুর কাটাছেঁড়া হয়েছে। এখনও চলছে। পরের বিশ্বকাপের আগে আমাদের একটা ভাল টিম তৈরি করতে হবে।’’ একইসঙ্গে নিজেদের দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ‘অজুহাত’ দেওয়ার কোনও জায়গা নেই, এমন মন্তব্যও করলেন তিনি। বলেন, ‘‘আমরা নিজেদের দেশে বাউন্সি বা গতিসম্পন্ন উইকেটে খেলে বড় হয়েছি। কিন্তু সে সব বলে কোনও লাভ নেই। অজুহাত দেওয়া উচিত নয়। উপমহাদেশে এসে কী ভাবে সফল হওয়া যায়, সেটাও আমাদের জানা উচিত।’’ এই আত্মবিশ্লেষণের ছোঁয়া যদি এখন ইনদওরের বাইশ গজে দেখা যায়!
ছবি: এএফপি এবং রয়টার্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy