Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

টাইব্রেকারে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ইউএসএ-র সামনে ইংল্যান্ড

ম্যাচ শুরুর চার মিনিটে জাপানের একটা আক্রমণ তার পর থেকেই ম্যাচে জাকিয়ে বসল ইংল্যান্ড। ফেভারিট হিসেবেই জাপানের বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। জিতেই মাঠ ছাড়ল তারা।

ইংল্যান্ড বনাম জাপান ম্যাচের একটি দৃশ্য। ছবি: ফিফা।

ইংল্যান্ড বনাম জাপান ম্যাচের একটি দৃশ্য। ছবি: ফিফা।

সুচরিতা সেন চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ২২:১০
Share: Save:

ইংল্যান্ড ০ (৫)

রিয়ান (গোল), কালাম(গোল), ফিলিপ (গোল), কার্টিস (গোল), কিরবি (গোল)

জাপান ০ (৩)

ইউকিনারি (গোল), মিয়াশিরো (গোল), কিদা (সেভ), কোজুকি (গোল)

একরাশ হতাশা। দুরন্ত লড়াই। দ্বিতীয়ার্ধের অনেকটা সময় রীতিমতো প্রতিপক্ষকে বেগ দিয়েও শেষরক্ষা হল না। চোখের জলেই মাঠ ছাড়ল জাপান। টাইব্রেকারে একটা শট সরাসরি ইংল্যান্ড গোলকিপারের হাতে তুলে দিয়েই ম্যাচ শেষ করে ফেলেছিল মোরিয়ামার ছেলেরা। তাও ভরসা ছিল ইংল্যান্ড যদি একটা ভুল করে। কিন্তু পুরো ম্যাচে একাধিক ভুল করেও টাইব্রেকারটা নিজেদের নামেই লিখে নিল ব্রিটিশরা।

৫৪ মিনিটে নাকামুরাকে তুলে নাওকি সুবাকিকে নামাতে জাপানের খেলাটাই ঘুরে গেল। সেই সময় থেকে কিছুটা যেন হতদ্যম দেখাল ইংল্যান্ডকে। জাপানের পর পর আক্রমণে ব্যস্ত থাকতে হল ইংল্যান্ড রক্ষণকে। উইং দিয়ে নাওকির দৌড়ই দ্বিতীয়ার্ধের জাপানকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ৯০ মিনিটে কেউই গোলের মুখ খুলতে পারল না। ম্যাচ গড়াল সরাসরি টাইব্রেকারে। উত্তেজক শুট আউটের সাক্ষী থাকল যুবভারতী। যাতে শেষ হাসি অবশ্য হেসে গেল সেই ইংল্যান্ডই। ৯০ মিনিটের ম্যাচে যে একাধিক মিস করল সেই রিয়ানই টাইব্রেকারে গোলের মুখ খুলল ইংল্যান্ডের হয়ে। ৩-২ থেকে জাপানের প্রথম মিস। কিদার শট বাঁচিয়ে দিল ইংল্যান্ড গোলকিপার। পরের শটটি নিতে এল সেই গোলকিপারই। গোওওওওল। একটিও শট মিস না করে টাইব্রেকারে জাপানকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল ইংল্যান্ড। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে হবে দুরন্ত ছন্দে থাকা ইউএসএ-র বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন

মনে হচ্ছিল নিজের দেশে খেলছি: টিম উইয়া

ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের যুবভারতী বিশ্বকাপের রঙে সেজে উঠেছে গত ৮ অক্টোবরই। অতীতে কলকাতা বার বার মুখ ফিরিয়েছে জাতীয় দলের ফুটবল থেকে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডানের বাইরে কলকাতাকে ঝাঁপাতে দেখা গিয়েছে শুধুমাত্র অ্যাটলেটিকো কলকাতায়। কিন্তু বিশ্বকাপের কলকাতা যে এ ভাবে অন্য সুরে গাইবে তা কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি। তাও আবার যেখানে ভারত নেই। প্রথম ম্যাচে যুবভারতী ভরিয়েছিল ৫৫ হাজারের উপরে ফুটবলপ্রেমী। মঙ্গলবার ইংল্যান্ড বনাম জাপানের মধ্যে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ স্টেডিয়ামে বসে দেখল ৫২ হাজার ৩০২জন সমর্থক। ম্যাচ শুরুর অনেক আগে থেকেই সব গেটের বাইরে লম্বা লাইন স্টেডিয়ামে ঢোকার। মিডল টায়ার পুরো ভরে গিয়ে প্রায় ভর্তি ছিল আপার ও লোয়ার টায়ারের অনেকটাই। যে কলকাতা এতদিন ইংল্যান্ডকে তাদের সমর্থন দিয়ে এসেছিল গ্রুপ পর্বে শেষ দিন পর্যন্ত সেটা দিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে পাঠাল ব্রিটিশদের।

ম্যাচ শুরুর চার মিনিটে জাপানের একটা আক্রমণ তার পর থেকেই ম্যাচে জাকিয়ে বসল ইংল্যান্ড। ফেভারিট হিসেবেই জাপানের বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। সেটা ধরে রাখতে সমর্থ হল। স্যাঞ্চোর ফিরে যাওয়া নিয়ে সাময়িক একটা অস্বস্তি ছিল মাঠে নামার আগে পর্যন্ত। মাঠে নেমে সেটা কাটিয়ে ওঠার বার্তাই দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড কোচ। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে স্যাঞ্চোর অভাব বোঝা গেল। গ্রুপ লিগে দাপিয়ে খেলা ইংল্যান্ডকে গোল করতে বেশ বেগ পেতে হল। বিশেষ করে ফাইনাল পাসের সময়। আক্রমণে উঠল, গোলের কাছেও পৌঁছে গেল কিন্তু ফিনিশ করতে ব্যর্থ ইংল্যান্ড ফরোয়ার্ডরা। গোলের সামনে গিয়ে বার বার খেই হারাল ব্রিটিশরা। স্যাঞ্চোর অভাব হয়তো এখানেই বার বার টের পেল ইংল্যান্ড দল। চার মিনিটের পর জাপানকে ম্যাচে ফিরতে দেখা গেল আবার ৩৬ মিনিটে। এক কথায় প্রথমার্ধের সব থেকে পজিটিভ আক্রমণ ছিল এটাই। ডানদিক থেকে বক্সের মধ্যে মাপা পাস রেখেছিল জাপানের তাইসেই। বক্সের মধ্যে যখন সেই বল পেলেন নাকামুরা তখন গোল হওয়াটাই নিশ্চিত ধরে নিয়েছিল গোটা যুবভারতী। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে নিজেকে রোনাল্ডোর সঙ্গে তুলনা করা নাকামুরা সেই বল সঠিকভাবে রিসিভই করতে পারল না। যা হওয়ার তাই হল, তার দুর্বল পাস ইংল্যান্ড ডিফেন্সের গায়ে ধাক্কা লেগে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও সুযোগ ছিল জাপানের কাছে। বাঁ দিক থেকে ততক্ষণে বক্সের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে সইচিরো কোজুকি। কিন্তু তারও অনভিজ্ঞ শট গিয়ে লাগল বাইরের নেটে।

আরও পড়ুন

আজ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জাপানের মেসি-রোনাল্ডো

তার আগে পোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইংল্যান্ডের সামনে যখন রিয়ানের ডানদিক থেকে বল নিয়ে উঠে আসা শট পোস্টে লেগে বেরিয়ে গেল বাইরে। প্রথমার্ধে আক্রমণে এগিয়ে ইংল্যান্ডই। কিন্তু ছন্নছাড়া। যা থেকে গোল এল না। শুরুতে জাপানের অ্যাটাকের পর একাধিকবার গোলের মুখ খোলার সুযোগ এসেছিল ইংল্যান্ডের সামনে কিন্তু কাজে লাগেনি। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ালেও একটা সময়ের পর জাঁকিয়ে বসে জাপান। দু’পক্ষই সুযোগ তৈরি করে গেল কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারল না। দ্বিতীয়ার্ধে দু’পক্ষই নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করল। ৬৯ মিনিটে জাপানের হয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট কুবোর। ৮৩ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট ইংল্যান্ডের। একটা সময়ের পর দু’দলই খেলল টাইব্রেকারের জন্য। শেষে বাজিমাত ইংল্যান্ডের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE