Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বক্সিং থেকে ফুটবল ময়দানে

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ, ফুটবলার পরিচিতি: মিডফিল্ডার রাহুল কে পি

আট বছর বয়সে রাহুলকে কিছুটা জোর করেই ত্রিশূরের একটি ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি দেন তার দাদা। তার পরেই বদলে যায় ছবিটা। বাধ্য হয়ে ফুটবল শুরু করা রাহুলের চোখে এখন স্বপ্ন ইউরোপের ক্লাবে খেলার।

রাহুল কে পি

রাহুল কে পি

শুভজিৎ মজুমদার
শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০৮
Share: Save:

আই এম বিজয়নের শহর ত্রিশূরে জন্ম রাহুল কে পি-র। অথচ ফুটবল নয়, স্বপ্ন দেখত বক্সার হওয়ার। বাড়িতে একা একাই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছিল। মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে রাস্তায় ফুটবল খেলত। রাহুলের ট্রাক-চালক বাবা চাইতেন, ছেলে লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকরিতে যোগ দিক। আর দাদা চাইতেন ভাই ফুটবলার হোক।

আট বছর বয়সে রাহুলকে কিছুটা জোর করেই ত্রিশূরের একটি ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি দেন তার দাদা। তার পরেই বদলে যায় ছবিটা। বাধ্য হয়ে ফুটবল শুরু করা রাহুলের চোখে এখন স্বপ্ন ইউরোপের ক্লাবে খেলার।

অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলে কেরলের একমাত্র প্রতিনিধি রাহুল ফরোয়ার্ড ও মিডফিল্ড দু’টো পজিশনেই খেলতে পারে। যুব বিশ্বকাপে প্রস্তুতির ফাঁকে আনন্দবাজার-কে রাহুল শোনাল তার উত্থানের কাহিনি, ‘‘ত্রিশূরে ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয়। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমার প্রিয় ছিল বক্সিং। ত্রিশূরে বক্সিং শেখার সুযোগ নেই। তা ছাড়া বাবার সেই আর্থিক সামর্থও ছিল না যে, আমাকে বেঙ্গালুরু বা চেন্নাইয়ে বক্সিং শিখতে পাঠাবেন। তবে দাদা যখন জোর করে ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দিয়েছিল, খুব রাগ হয়েছিল।’’

কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি হওয়ার পর অল্প দিনের মধ্যেই নজর কেড়ে নেয় রাহুল। বেশ কয়েকটা টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়। তবে ভাল খেলার নেপথ্যে রয়েছে অন্য কাহিনি! রাহুলের কথায়, ‘‘আমাদের পাড়ায় এক জন ছিলেন, যিনি কেউ ভাল খেললেই বাদাম খাওয়াতেন। বাদামের লোভেই মাঠে নেমে নিজেকে উজাড় করে দিতাম।’’

রাহুলের যখন বারো বছর বয়স, তখন মালাপ্পুরম জেলায় পারাপপুর ফুটবল অ্যাকাডেমির নির্বাচকদের নজরে পড়ে যায় রাহুল। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে অ্যাকাডেমিতে যাওয়ার ইচ্ছে একেবারেই ছিল না তার। এ বারও দাদা জোর করে নিয়ে যান রাহুলকে। অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলের ফুটবলার বলল, ‘‘দাদার জন্যই এই জায়গায় আসতে পেরেছি।’’ রাহুল কৃতজ্ঞ বিজয়নের কাছেও। তার কথায়, ‘‘বিজয়ন স্যার আমাকে শিখিয়েছেন, কী ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে।’’

ভারতীয় দলের প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারের একমাত্র লক্ষ্য ফুটবল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই শুধু নয়, পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য ফেরানো। বলল, ‘‘আমার বাবার বয়স হয়ে গিয়েছে। তাই ট্রাক চালানোর ধকল আর নিতে পারেন না। অটো চালিয়ে কোনও মতে সংসার চালান। ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাবাকে বিশ্রাম দিতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE