শাস্ত্রীকে নিয়ে মুখ খুললেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। ছবি: এএফপি।
গত কয়েক মাস ধরে কোচ নিয়ে চলা নাটকের শেষে অবশেষে পাশাপাশি বসতে দেখা গেল দু’জনকে। বিরাট কোহালি এবং রবি শাস্ত্রী। এবং, এই প্রথম কোচ শাস্ত্রীকে নিয়ে মুখ খুললেন ভারত অধিনায়ক।
তিনটে টেস্ট, পাঁচটা ওয়ান ডে আর একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বুধবারই শ্রীলঙ্কা উড়ে গেল ভারত। যেখানে গলে প্রথম টেস্ট শুরু ২৬ জুলাই। তার আগে সাংবাদিক বৈঠকে কোহালি বলে গেলেন, তাঁরা দু’জনে ভালই জানেন তাঁদের থেকে কী চাওয়া হচ্ছে। ‘‘আমরা তিন বছর (২০১৪-’১৬) এক সঙ্গে কাজ করেছি। বুঝতেই পারছেন, আমাদের নিজেদের মধ্যে একটা ভাল বোঝাপড়া আছে। এই কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফ সম্পর্কে আমার নতুন করে কিছু জানার নেই,’’ মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের বলেন বিরাট।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকেই কোচ নাটক শুরু। অনিল কুম্বলের ইস্তফা এবং তার পরে কোচ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। যা নিয়ে বিরাট বলছেন, ‘‘জানি, অনেক কিছু কথা রটেছে। অনেক জল্পনা ছড়িয়েছে। কিন্তু সে সব আমার হাতে ছিল না। আমার কাজটা হল মাঠে নেমে খেলা, নিজের সেরাটা দেওয়া আর ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কাজ করে সেরা টিম বানানো। যে কাজগুলো আমি ঠিকঠাক করতে পারি।’’
আরও পড়ুন: দলটা অধিনায়কের, ক্রিকেটাররাই আসল, বলছেন শাস্ত্রী
কিন্তু বিদেশে লম্বা একটা সিরিজ খেলতে যাওয়ার আগে এই ধরনের বিতর্ক কি আপনাদের চাপে ফেলে দেবে না? কোহালি মানতে চান না। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমার মনে হয় না এতে আমাদের ওপর কোনও বাড়তি চাপ পড়বে। আমি বিশ্বাস করি বাইরের পৃথিবীতে যা-ই ঘটুক না কেন, যা হওয়ার তা হবেই।’’ এর পরে কোহালি পরিষ্কার করে দিচ্ছেন তাঁদের মন্ত্র। ‘‘টিম হিসেবে আমরা চাই আমাদের ঠিক করা লক্ষ্যটা ছুঁতে। আমাদের সবাই অতীতে কখনও না কখনও কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সমালোচনার মুখে পড়েছে। তাই আমার ওপর বাড়তি দায়িত্ব আছে বলে আমি আর চাপে পড়ি না।’’
যাঁকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই শাস্ত্রী বুধবার অধিনায়কের পাশে বসে বলে দেন, ‘‘শাস্ত্রী, কুম্বলেরা তো আসবে, যাবে, ভারতীয় ক্রিকেট ঠিকই চলবে। ভারত যদি আজ এক নম্বর টেস্ট দল হয়ে থাকে, তা হলে তার যাবতীয় কৃতিত্ব খেলোয়াড়দের।’’
যাত্রা: শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে বাংলার দুই ক্রিকেটার। মায়ের আশীর্বাদ মহম্মদ শামিকে। বিমানবন্দরে ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
শাস্ত্রী এও বুঝিয়ে দিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহের বিতর্ক তাঁকে একটুও প্রভাবিত করতে পারেনি। ‘‘আমি মনের মধ্যে কিছু পুষে রাখিনি। শুধু এটুকু বলব, গত বার যখন শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলাম, তার চেয়ে আমি এখন অনেক পরিণত। মনে হচ্ছে, গত কয়েক সপ্তাহে আরও বেশি পরিণত হয়েছি।’’ পাশাপাশি তাঁর বোলিং কোচ ভরত অরুণের পাশে দাঁড়িয়ে শাস্ত্রী বলেন, ‘‘পনেরো বছর ধরে কোচিং করাচ্ছে অরুণ। ও কোনও বড় নাম হলে অনেক হইচই হতো। ও আমার চেয়েও ছেলেদের বেশি চেনে।’’
অনেকেই মনে করছেন, শ্রীলঙ্কা সফরটা এ বার কোহালি-শাস্ত্রী জুটির কাছে বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। বিশেষ করে শাস্ত্রীর কাছে। বিষাণ সিংহ বেদী যেমন টুইট করেছেন, ‘এমন কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারের নাম মনে করতে পারছি না যে আর জে শাস্ত্রীর মতো এত দায়িত্ব পালন করেছে। এ বারের দায়িত্বটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিশাল প্রত্যাশার চাপ, যা ওকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।’
যে কোনও চ্যালেঞ্জের জন্য তিনি যে তৈরি, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন কোহালি। বলছেন, ‘‘যত দিন পর্যন্ত আমি অধিনায়ক থাকব, তত দিন দায়িত্ব নিয়ে যাব। আপনি যদি বাইরের ব্যাপার স্যাপার নিয়ে বেশি ঘামাতে যান, তা হলে নিজের কাজটা করতে পারবেন না। অনেকটা ব্যাটিংয়ের মতো। ব্যাট করতে নামার সময় আপনি যদি ভাবতে থাকেন, আউট হয়ে গেলে কী হবে, তা হলে আর খেলবেন কী করে?’’
সাংবাদিক বৈঠক নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়ে যাওয়ায় কুম্বলে নিয়ে কোহালিকে সরাসরি কোনও প্রশ্ন করা যায়নি। ভারত অধিনায়কের কাছে অবশ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল, খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফের মধ্যে সম্পর্কটা কী রকম হওয়া উচিত? যার জবাবে কোহালি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া এবং আলোচনাটা জীবনের সব ক্ষেত্রেই খুব প্রয়োজন। জীবনে আমি যে নিয়মটা মেনে চলি, সেটা সব জায়গাতেই মেনে চলি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy