আত্মবিশ্বাসী: আপাতত আইপিএলের দিকে তাকিয়ে যুবরাজ সিংহ। ফাইল চিত্র
আরও একটা বছর খেলে যেতে চান তিনি। তার পর নিজের অবসর নিয়ে ভাববেন। বক্তব্য যুবরাজ সিংহের।
ভারতীয় দল থেকে তিনি এখন ব্রাত্য। ঘরোয়া ক্রিকেট এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)— এই হয়ে দাঁড়িয়েছে যুবরাজের লড়াইয়ের মঞ্চ। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কী তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা? মোনাকোয় এক অনুষ্ঠানে সংবাদ সংস্থার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে যুবরাজ তাঁর মনের ভাব খোলাখুলি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এই মুহূর্তে আইপিএলের দিকে তাকিয়ে আছি। আইপিএলে ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই। এটা আমার কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার জন্য এটা আমার কাছে একটা বড় মঞ্চ। ২০১৯ পর্যন্ত আমি ক্রিকেট খেলে যেতে চাই। তার পরে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’
আইপিএলে এ বার তিনি ফিরে এসেছেন তাঁর প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজি দল কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবে। সেখানেই নিজের ক্রিকেট জীবনের সায়াহ্নে এসে লড়াইটা চালিয়ে যেতে চান ভারতের হয়ে দুই ফর্ম্যাটে বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার। নিজের জীবনের এই মোড়ে দাঁড়িয়ে যুবরাজের মনে পড়ে যাচ্ছে তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারের শুরুর দিককার ঘটনাগুলো। যে প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি বলছেন, ‘‘ক্রিকেট জীবনের প্রথম ৬-৭ বছর আমি সেরা ফর্মে ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তখন ভারতীয় টেস্ট দলে খেলার সুযোগ পাইনি। কারণ তখন দলে দুর্দান্ত সব ব্যাটসম্যান ছিল। এর পরে যখন সুযোগ আসতে শুরু করে, তখনই আমার ক্যানসার ধরা পড়ে। এই যন্ত্রণাটা আমার থেকেই যাবে। তবে এ সব আমার হাতে ছিল না। আমি এখন চাইছি, যতটুকু ক্রিকেট আমার বাকি আছে, সেটা খেলে যেতে।’’
ভারতের সদ্য সমাপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বিরাট কোহালির দল যে ভাবে খেলেছে, তাতে মুগ্ধ যুবরাজ। কোহালিদের প্রশংসা করে যুবরাজ বলছেন, ‘‘দারুণ খেলেছে ভারত। টেস্ট সিরিজটা হারের পর ওরা যে ভাবে ফিরে এসেছে, তাতেই ওদের চারিত্রিক দৃঢ়তাটা বোঝা যায়। তবে টেস্ট সিরিজেও খুব দারুণ লড়াই হয়েছিল। যে কেউ জিততে পারত। কিন্তু ওয়ান ডে সিরিজটা ভারত একতরফা খেলে জিতেছে। সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে কোহালি।’’
ভারতীয় স্পিনারদের কথাও আলাদা ভাবে বলতে চান যুবরাজ। ‘‘যুজবেন্দ্র চহাল এবং কুলদীপ যাদবের কথা তো আলাদা করে বলতেই হবে। ওরা দু’জন দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওয়ান ডে সিরিজে দারুণ ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিল। ওয়ান ডে-র পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতল ভারত। তিনটে সিরিজের মধ্যে দু’টো জেতা কিন্তু কম কৃতিত্বের নয়। এতেই ভারতের আধিপত্য বোঝা গিয়েছে,’’ বলেছেন যুবরাজ।
ভারতের সামনে এর পর বিদেশ সফর বলতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ। যুবরাজ বলছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিশ্বাস করাতে শেখাবে যে বিদেশেও আমরা জিততে পারি। এই দলটা এখন বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় ভাল কিছু করতে গেলে সবাইকে ধারাবাহিক ভাবে ভাল পারফরম্যান্স করতে হবে।’’
শুধু ভারতের সিনিয়র দলই নয়, জুনিয়র দলও দারুণ খেলে চলেছে। সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার আইপিএল নিলামে বেশি দামে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন। যুবরাজের উত্থানও এই যুব দলের মঞ্চ থেকেই। তাই তরুণ প্রতিভা পৃথ্বী শ, শুভমান গিলদের জন্য কিছু পরামর্শও দিচ্ছেন যুবি। বলছেন, ‘‘ওদের বুঝতে হবে, ওরা যত ভাল খেলবে তত উপার্জন করতে পারবে। তাই অর্থ উপার্জন নিয়ে ওদের ভাবার দরকার নেই। ওদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। কী ভাবে নিজেদের আরও উন্নত করতে হবে আর ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ তৈরি করতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy