Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অতিরিক্ত এজিকেও সরিয়ে দিল নবান্ন

তৃণমূল জমানার প্রথম গভর্নমেন্ট প্লিডার বা জিপি তিনি। পরে অ্যাডভোকেট জেনারেল বা এজি হওয়ার জন্যও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁকে অনুরোধ করেছিল বলে রাজনৈতিক শিবিরের খবর। এ-হেন অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ছ’মাসের মধ্যে রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল (এএজি)-এর পদ সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় অতিরিক্ত এজি হচ্ছেন লক্ষ্মী গুপ্ত। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

তৃণমূল জমানার প্রথম গভর্নমেন্ট প্লিডার বা জিপি তিনি। পরে অ্যাডভোকেট জেনারেল বা এজি হওয়ার জন্যও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁকে অনুরোধ করেছিল বলে রাজনৈতিক শিবিরের খবর। এ-হেন অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ছ’মাসের মধ্যে রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল (এএজি)-এর পদ সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় অতিরিক্ত এজি হচ্ছেন লক্ষ্মী গুপ্ত। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে।

মমতা-সরকারের দ্বিতীয় এজি বিমল চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার পদত্যাগ করার পরে ওই পদে অশোকবাবুকে চাইছিলেন দলের কেউ কেউ। কিন্তু দেখা গেল, তৃণমূল আমলের প্রথম গভর্নমেন্ট প্লিডার অশোকবাবুকে এজি তো করা হলই না। উল্টে অতিরিক্ত এজি-র পদও হারালেন তিনি। এ দিনই নবান্ন জানায়, এজি হচ্ছেন জয়ন্ত মিত্র। সাড়ে তিন বছরের তৃণমূল জমানায় জয়ন্তবাবু রাজ্যের তৃতীয় এজি।

একদা হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের (মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাড়ি) অতি আস্থাভাজন ছিলেন অশোকবাবু। তাঁকেই পদ ছাড়তে হল কেন? কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রের খবর, তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের দু’টি গোষ্ঠীর দড়ি টানাটানির জেরেই সরে যেতে হল অশোকবাবুকে। তবে খোদ অশোকবাবুর দাবি, “আমাকে সরানো হয়নি। স্বাস্থ্যের কারণে আমাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কয়েক দিন আগে আমি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েও দিয়েছি।” তবে কার কাছে তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, অশোকবাবু এ দিন তা জানাননি। শুধু বলেছেন, এর আগে তাঁকে রাজ্যের এজি-র পদ নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্যের কারণেই তিনি সেই পদ নিতে চাননি।

অশোকবাবু যা-ই বলুন, হাইকোর্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাঁকে পদ খোয়াতে হল তৃণমূলের এক সাংসদ-আইনজীবীর চাপেই। তবে ওই সাংসদের দাবি, নতুন এজি এবং অতিরিক্ত এজি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তাঁর কোনও ভূমিকাই নেই। তাঁর সঙ্গে এই ব্যাপারে কেউ কোনও পরামর্শও করেননি বলে ওই সাংসদের দাবি।

রাজ্যের আইন দফতর সূত্রের খবর, এজি থাকাকালীন বিমলবাবু অসুস্থতার জন্য নিয়মিত হাইকোর্টে আসতে পারতেন না। অতিরিক্ত এজি হয়ে অশোকবাবুই রাজ্যের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলায় নিয়মিত সওয়াল করছিলেন। তা হলে তাঁকে হঠাৎ এ ভাবে সরানো হল কেন?

কলকাতা হাইকোর্টে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের একটি অংশের অভিযোগ, তাপস পালের কটূক্তি কাণ্ড, পাড়ুইয়ের হত্যাকাণ্ডের মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলায় অশোকবাবু সরকারি আইনজীবীদের ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারেননি। বিভিন্ন মামলায় রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেছে হাইকোর্ট। আর অতি সম্প্রতি ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সভা নিয়ে যে-মামলা হয়েছিল, তাতে সরকার হেরে যায়। ওই সভা থেকে তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেই মামলার ফলাফলের পরেই অশোকবাবুর ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল বলে হাইকোর্টের একটি সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE