হাওড়া পুরসভার সঙ্গে বালি পুরসভার সংযুক্তিকরণ ঘটানোর ক্ষেত্রে জটিলতা কাটাতে পুর নির্বাচনী আইনের সংশোধন করে অর্ডিন্যান্স জারি করল রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে রাজারহাট-গোপালপুর এবং বিধাননগর পুরসভার সংযুক্তিকরণ হয়ে নির্বাচন যত দিন না হচ্ছে, তত দিন ওখানকার উন্নয়নমূলক কাজ যাতে বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে পৃথক প্রশাসনিক কমিটি তৈরি হয়েছে বলে জানান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ওই কমিটিতে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূলের দুই বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত ও সুজিত বসু।
আসানসোল ও বিধাননগর পুরসভার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল গত মার্চে। কিন্তু নতুন এলাকা সংযোজন করে নয়া পুর-নিগম তৈরির জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। যা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরকারের লড়াই গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ঠিক আছে, ৩ অক্টোবর আসানসোল এবং বিধাননগর পুরসভায় নির্বাচন হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, রাজারহাট-গোপালপুর ও বিধাননগরের ক্ষেত্রে কমিটিতে মন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে বিবদমান দুই বিধায়ক সব্যসাচী-সুজিতকে রাখা হয়েছে। কিন্তু রাজারহাট-গোপালপুরের সিপিএম পরিচালিত পুরবোর্ডের সদ্যপ্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেওয়া তাপস চট্টোপ্যাধায়কে কমিটিতে রাখা হয়নি! এরই পাশাপাশি বিরোধীদের প্রশ্ন, পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পরে কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। এখন নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরে মাসদুয়েকের জন্য আবার কমিটি গড়তে হল কেন?
সম্প্রতি হাওড়া পুর-নিগমের সঙ্গে বালি পুরসভাকেও যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সাবেক হাওড়া পুর-নিগমের ৫০টি ওয়ার্ডের নির্বাচন হয়েছে ২০১৩ সালে। ফলে এখনই ওই পুরসভার সাধারণ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আবার হাওড়ার সঙ্গে বালি পুরসভার সংযুক্তির পরে সেই অংশে নতুন করে ১৬টি ওয়ার্ড হয়েছে। সেই ওয়ার্ডগুলির নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু পুর আইনের কোন ধারায় এবং ওই ১৬টি ওয়ার্ডের নির্বাচনকে কী হিসাবে চিহ্নিত করা হবে, তা নিয়ে আইনি জটিলতা দেখা দিয়েছিল। শেষমেশ এই জটিলতা কাটাতেই অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে। মহাকরণে বুধবার মন্ত্রী ফিরহাদ জানান, বর্তমানে পুর নির্বাচনী আইনে বলা আছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারের মৃত্যু হলে, কোনও কারণে পদ হারালে বা পদত্যাগ করলে ওই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন হবে। অর্ডিন্যান্সে সেখানে একটি লাইন যোগ করা হয়েছে। সেটি হল, কোনও পুরসভায় নতুন এলাকা সংযোজিত হলে এবং ওই পুরসভার সাধারণ নির্বাচনের আগে সেখানে ভোট করতে হলে সংযোজিত এলাকার ভোটকে উপনির্বাচন হিসাবে গণ্য করা হবে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বলেন, ‘‘অর্ডিন্যান্সের খবর জানা নেই।’’ ফলে হাওড়া পুর-নিগমের সংযোজিত ১৬টি ওয়ার্ডের নির্বাচনী ভাগ্য এখনও নির্ধারিত হয়নি, দাবি কমিশন সূত্রের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy