Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আঙুল হারানো শিশুর বাবাকে সরকারি চাকরি

এক নার্সের অসাবধানতায় কাটা গিয়েছিল সদ্যোজাত এক শিশুর আঙুল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তার বাবা বাবলা মণ্ডলকে চাকরি দিল স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার মণ্ডল জেলাশাসক তাপস চৌধুরীর হাত দিয়ে বাবলাবাবুর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব বুধবার রাতেই আমাকে ফ্যাক্স করে ওই নির্দেশ দেন।

নিয়োগপত্র নিয়ে বাবলা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নিয়োগপত্র নিয়ে বাবলা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৪
Share: Save:

এক নার্সের অসাবধানতায় কাটা গিয়েছিল সদ্যোজাত এক শিশুর আঙুল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তার বাবা বাবলা মণ্ডলকে চাকরি দিল স্বাস্থ্য দফতর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার মণ্ডল জেলাশাসক তাপস চৌধুরীর হাত দিয়ে বাবলাবাবুর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব বুধবার রাতেই আমাকে ফ্যাক্স করে ওই নির্দেশ দেন। বাবলাবাবুকে বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা স্বাস্থকেন্দ্রে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী হিসাবে স্থায়ী সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর বেতনক্রম ৪৬০০ টাকা থেকে শুরু হচ্ছে। এখন মাসে তিনি ১২ হাজার টাকার কিছু বেশি বেতন পাবেন। আজ, শুক্রবার থেকে তাকে চাকরিতে যোগ দিতে বলা হয়েছে।’’
তবে বাবলাবাবুকে যে ভাবে চাকরি দেওয়া হল, তা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে। সরকারি চাকরির আগে নিয়ম মতো যে পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয়, বাবলাবাবুর ক্ষেত্রে তা-ও করা হয়নি। জেলাশাসক তাপসবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ ভেরিফিকেশন সহ অন্য যে সব নিয়ম রয়েছে তা সবই নিশ্চয়ই পালন করা হবে।’’ দাসুল গ্রামের বাসিন্দা মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ বাবলাবাবু পতিরাম এলাকার একটি দোকানে চাকরি করতেন। তিন বছর আগে বিয়ে করেছিলেন। গত ১২ জুলাই স্যালাইনের চ্যানেল কাটতে গিয়ে বালুরঘাট হাসপাতালে তাঁর সদ্যোজাত শিশুকন্যার বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল কেটে ফেলেছিলেন এক নার্স। এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, অভিযুক্ত নার্সের চাকরি যাওয়া উচিত।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শিশুটিকে। কিন্তু কাটা আঙুল জোড়া না লাগায় বাড়ি ফিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল শিশুটির পরিবার। এখন অবশ্য ধুয়েমুছে গিয়েছে সমস্ত ক্ষোভ। বাবলাবাবুর স্ত্রী মামনিদেবী বলেন, ‘‘আমরা খুব খুশি। এসএসকেএমের চিকিৎসকরা ৬ মাস পর আবার যেতে বলেছেন। তখন আঙুলে প্লাস্টিক সার্জারি হবে বলে তারা জানিয়েছেন।’’

বাবলাবাবু বলেন, ‘‘এসএসকেএম হাসপাতালে কন্যার চিকিৎসার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের অবস্থা সম্পর্কে জেনে নিয়েছিলেন। তার জন্য যে তিনি একেবারে সরকারি চাকরি করে দেবেন ভাবতে পারিনি। ২৪ ঘন্টা আগেও জানতাম না ভাগ্য ফিরতে চলেছে।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘ওই নার্স অনুতপ্ত। ওঁরও দুটি শিশু কন্যা রয়েছে। চাকরি পাওয়ায় পর আমরা শিশুর চিকিৎসা ও যত্ন নিতে পারবো। তাই নার্সকে ক্ষমা করে দিয়ে ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE