Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ইডি-র হেফাজতে থাকতে চাইলেন সুদীপ্ত

এ বার নিজে থেকেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র হেফাজতে যেতে চাইছেন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন! বলছেন, তদন্তের স্বার্থে তিনি ইডি-কে বহু তথ্য দিতে চান। আর সে-জন্য চার-পাঁচ দিন নয়, অন্তত দশটা দিন ইডি-র হেফাজতে থাকার ইচ্ছা তাঁর। কলকাতা জেলা জজের আদালতে শনিবার সুদীপ্ত নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। এর আগে সারদা কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া রাজ্যসভার সদস্য কুণাল ঘোষ নিজে থেকে জানিয়েছিলেন, তিনি সিবিআই হেফাজতে গিয়ে অনেক তথ্য দিতে চান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

এ বার নিজে থেকেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র হেফাজতে যেতে চাইছেন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন! বলছেন, তদন্তের স্বার্থে তিনি ইডি-কে বহু তথ্য দিতে চান। আর সে-জন্য চার-পাঁচ দিন নয়, অন্তত দশটা দিন ইডি-র হেফাজতে থাকার ইচ্ছা তাঁর। কলকাতা জেলা জজের আদালতে শনিবার সুদীপ্ত নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।

এর আগে সারদা কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া রাজ্যসভার সদস্য কুণাল ঘোষ নিজে থেকে জানিয়েছিলেন, তিনি সিবিআই হেফাজতে গিয়ে অনেক তথ্য দিতে চান। তবে সুদীপ্ত আগে কখনও এমন কথা বলেননি। আমানতকারীরা যাতে তাঁদের টাকা ফেরত পান, সেটা তিনিও চান বলে সুদীপ্ত সেন জানিয়েছেন।

আদালত অবশ্য সারদা-কর্তার আবেদন মঞ্জুর করেনি। ইডি-কে আদালতের নির্দেশ, প্রয়োজন হলে তাদের তদন্তকারীরা জেলে গিয়ে সুদীপ্তকে জেরা করতে পারবেন এবং তাঁর বক্তব্য জেলেই নথিভুক্ত করবেন।

শুধু তা-ই নয়, ইডি-র সুরে সুর মিলিয়ে সুদীপ্ত সেন এ দিন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছেন। ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র এ দিন আদালতে জানান, বৃহস্পতিবার সুদীপ্ত সেনকে জেলে গিয়ে তদন্তকারীরা যখন জেরা করেন, তখন সারদা কর্তা তাঁদের জানান, তিনি আরও কিছু জানাতে চান। কিন্তু সেই সময়ে তাঁর বক্তব্য নথিভুক্ত করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু কারা দফতরের কর্মীদের একাংশের অসহযোগিতায় সেই কাজ করা যায়নি। এ দিন জেলা জজের কাছে সুদীপ্তও একই অভিযোগ করেন।

কারা দফতর অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ইডি-র বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনেছে। এডিজি (কারা) অধীর শর্মার দাবি, “ইডি-র কেবল সুদীপ্ত সেনকে জেরা ও তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করার অনুমতি ছিল। কিন্তু জেরা করার সময়ে দেখা যায় সুদীপ্তকে কিছু কাগজে সই করানো হচ্ছে। তখন জেল কর্তৃপক্ষ সরকারি ভাবে আপত্তি জানান।” এডিজি-র বক্তব্য, অতীতে রাজ্য সরকার অভিযোগ জানিয়েছিল, সুদীপ্তকে দিয়ে ইডি পুরনো তারিখ দিয়ে কিছু কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে। তার পর থেকেই কারা দফতর সতর্ক রয়েছে। সে জন্যই ইডি-র ওই কাজে আপত্তি তোলা হয়।

ইডি যদিও জানিয়েছে, দু’দিন আগে জেলে গিয়ে সুদীপ্ত সেনকে জেরা করে যথেষ্টই লাভ হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা সারদা সংস্থার প্রচুর স্থাবর সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। তাদের দাবি, সংস্থার তদন্তকারীরা সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে গিয়ে সেই সব সম্পত্তি সরেজমিনে দেখেও এসেছেন। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা শনিবার দাবি করেন, যুগ্ম অধিকর্তা পদমর্যাদার এক অফিসার সেই সব সম্পত্তি ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্তও করেছেন। ইডি-র একটি সূত্রের খবর, স্থাবর সম্পত্তিগুলির অধিকাংশই জমি। সঙ্গে কয়েকটি বাড়ি, হোটেল ও রিসর্টও রয়েছে। ইডি সূত্রের খবর, সারদা-গোষ্ঠীর কাছ থেকে উত্তরবঙ্গ-সহ কয়েকটি জায়গায় আর্থিক সুবিধে পাওয়া বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নামও জেরায় সুদীপ্ত জানিয়েছেন। ইডি সূত্রের খবর, নতুন যে সব প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম সারদা কর্তা জানিয়েছেন, তাঁদের শীঘ্রই ডেকে পাঠানো হবে। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে। শুধু তা-ই নয়, এই দফায় সংশোধনাগারে ইডি-র জেরার মুখে সুদীপ্ত সেন সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার এমন কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস দিয়েছেন, যেগুলি আগে জানা ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE