Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এখনও ফেরেনি ধূপগুড়ির নিহত ছাত্রীর পরিবার

ধূপগুড়ি-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সব চারজনের গ্রেফতারের পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও রাতে বাড়ি ফিরছেন না মৃত ছাত্রীর পরিবার। এখনও পরিবারটি মধ্যপাড়ার বাড়িতে দিনেরবেলায় থেকে সন্ধ্যা নামতেই সামান্য দূরে ছাত্রীর দাদুর বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। গত শনিবার রাতে মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পরেও পরিবারটি রাতে বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছে না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের সন্দেহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:০০
Share: Save:

ধূপগুড়ি-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সব চারজনের গ্রেফতারের পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও রাতে বাড়ি ফিরছেন না মৃত ছাত্রীর পরিবার। এখনও পরিবারটি মধ্যপাড়ার বাড়িতে দিনেরবেলায় থেকে সন্ধ্যা নামতেই সামান্য দূরে ছাত্রীর দাদুর বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। গত শনিবার রাতে মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পরেও পরিবারটি রাতে বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছে না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের সন্দেহ।

গত ১ সেপ্টেম্বর সালিশি সভায় হেনস্থার পরে শেষবারের মতো নিজের বাড়িতে ছিলেন মৃত দশম শ্রেনির ছাত্রীর বাবা। দিনভর সেখানে থেকে তিনি দুই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে চলে যেতেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শেষ প্রান্তে শ্বশুরবাড়িতে। অভিযুক্তদের হুমকির ভয়ে কি রাতে থাকতে সাহস হয়নি? ছাত্রীর মা বলেন, “হুমকি কেউ দেয়নি। মেয়েটা চলে যাওয়ার পরে এখানে থাকতে মন চায়নি। পাশে বাপের বাড়ি। তাই ওখানে থাকতে শুরু করেছি।” বাড়িতে রাতে কোনওদিন থাকবেন না? ছাত্রীর বাবা বলেন, “কালীপুজোর পরে এখানেই থাকব বলে ভাবছি।” আর অন্যতম অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গে দম্পতি কোনও মন্তব্য করেনি।

গত ২ সেপ্টেম্বর রেল লাইনের ধার থেকে ছাত্রীটির দেহ উদ্ধারের পরে ১৩ জনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা। ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৯ জন ধরা পড়লেও প্রধান চার অভিযুক্ত বাইরে থাকায় এলাকার বাসিন্দাদের মতো তাঁরাও কার্যত আতঙ্কে ছিলেন। মূল অভিযুক্তদের পর অবশ্য পরিবারটি কিছু স্বস্তি পেয়েছেন বলে তাঁদের প্রতিবেশীদের ধারণা।

সোমবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে গাছপালার ডাল কেটে পরিষ্কার করার কাজ করেন ছাত্রীর বাবা। তিনি জানান, দুই ছেলেমেয়ে মাথাভাঙায় পিসির বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে। ওরা ফিরবে কালীপুজোর পরে। ওরা আসার পর রাতে বাড়ি থাকব বলে ভাবছি। এদিনও পড়শিদের সহযোগিতার কথা জানাতে ভোলেননি তিনি। তাঁর কথায়, “ঘটনার পর থেকে প্রতিবেশীরা প্রত্যেকে পাশে দাঁড়িয়েছে। ওঁরা না থাকলে আমরা কেউ বেঁচে থাকতে পারতাম না। এখন যাঁরা ধরা পড়েছে তাঁদের প্রত্যেকের কঠোর শাস্তি হলে শান্তি পাব।”

রবিবার রাতে আর পুলিশ আসেনি এলাকায়। তবুও থমথমে পরিস্থিতি থেকেই গিয়েছে। প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না কেউ। কয়েকজন প্রবীণ জানান, মৃত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিরোধীরা। আর শনিবার রাতে যারা ধরা পড়েছে তাঁরা শাসক দলের নেতা। তাই পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলে কেউ বিতর্ক চান না। মৃত ছাত্রীর বাবা ওই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “বিতর্কে জড়াবেন না। একটু স্বস্তিতে থাকতে দিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE