Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এত অস্ত্র এলাকায় আসছে কী ভাবে, প্রশ্ন নেত্রী রূপার

রাজ্যজুড়ে শাসকদলের সন্দ্রাস নিয়ে বিধানসভায় সওয়াল তোলার আগে, বৃহস্পতিবার পাড়ুইয়ে আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের বাড়ি ঘুরে গেলেন রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। এ দিন এলাকার একাধিক গ্রামে যায় শমীকবাবুর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনি‌ধি দল।

চৌমণ্ডলপুরে বিজেপি-র প্রতিনিধি দলকে দেখে গ্রামবাসীর ঢল। খুদেকে আদর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

চৌমণ্ডলপুরে বিজেপি-র প্রতিনিধি দলকে দেখে গ্রামবাসীর ঢল। খুদেকে আদর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়ুই শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:৪১
Share: Save:

রাজ্যজুড়ে শাসকদলের সন্দ্রাস নিয়ে বিধানসভায় সওয়াল তোলার আগে, বৃহস্পতিবার পাড়ুইয়ে আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের বাড়ি ঘুরে গেলেন রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। এ দিন এলাকার একাধিক গ্রামে যায় শমীকবাবুর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনি‌ধি দল। ছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার ও জেলা নেতৃত্ব। শমীকবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবং পুলিশ প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। শুধু বিরোধীদের নয়, সাধারণ বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়েছে। বিধানসভায় প্রসঙ্গটি তুলব। দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাস্ট্রমন্ত্রীকে লিখিত ভাবে রিপোর্ট দেব।”

এ দিন পাড়ুইয়ের সাত্তোরে বিজেপির প্রতিনিধি দলটি পৌঁছয় তিনটে নাগাদ। গত কয়েকদিন ধরেই এলাকা দখল নিয়ে ফের তেতে উঠেছে পাড়ুই থানা এলাকা। বোমায় জখম হন বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী। স্থানীয় বিজেপি নেতা হৃদয় ঘোষ দাবি করেন, তাঁদের কর্মী শেখ লালনকে তৃণমূলের দুষ্কৃতী শেখ কানুর নেতৃত্বে বোমা মারা হয়েছে। লালন বর্ধমানেরই এক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গুরুতর বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন শেখ আব্দুল সালাম নামে এক বিজেপি কর্মীও। প্রতিনিধি দলটি এ দিন প্রথমে বিজেপি কর্মী শেখ লালনের বাড়ি যায়। সংকটজনক অবস্থায় লালন বর্ধমানের হাসপাতালে বর্তমান চিকিৎসাধীন। প্রতিনিধিদল আহত কর্মীর স্ত্রী এবং মাকে আশ্বস্ত করেন। এরপর, পাড়ুই থানায় গিয়ে প্রায় কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করার পরও, থানার ওসি সহ পদস্থ কোনও পুলিশ অফিসারকে না পেয়ে, ফোনে কথা বলে বেরিয়ে আসেন থানা থেকে। পাড়ুই থানা থেকে তাঁরা যান বেলপাতা গ্রামে।

গত সোমবার অভিযোগ ওঠে, এই বেলপাতা গ্রামেরই বিজেপি কর্মী শেখ আব্দুল সালামকে তৃণমূলের কর্মী সমর্থক এবং তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করেছে। তিনি এখন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ওই প্রতিনিধি দল। আক্রান্তদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করার কথা জানান তাঁরা। মাখড়া গ্রামে গিয়ে নিহত শেখ তৌসিফের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন।

দলীয় কর্মী-সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের কথা বলার সময় এক পুলিশ কর্মী ভিডিও রেকর্ড করায় উত্তেজনা ছড়ায়। সেই নিয়ে ওই পুলিশ কর্মী সুকান্ত পালকে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি এবং পরে চড়-থাপড় মারেন স্থানীয় বাসিন্দা। পরে অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ দিন চৌমণ্ডলপুরে গ্রেফতার বিজেপি নেতা সদাই শেখের পরিবার এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলে শমীকবাবুরা। তিনি বলেন, ‘‘সদাই শেখের জামিনের জন্য যতদূর যাওয়ার যাব। সদাই শেখের নেতৃত্বে এই এলাকায় বিজেপি ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচন লড়বে।” এ দিন সন্ধ্যায় বিজেপি নেতা অভিযোগ করেন, ঘরছাড়া কর্মীদের গ্রামে ফেরানো নিয়ে বারবার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হচ্ছে পাড়ুই। সোমবার আব্দুল সালাম নামে এক বিজেপি কর্মী মার খাওয়ায় ফের পরিস্থিতি তেতে ওঠে। রাতে স্থানীয় বেলপাতা গ্রামে বোমাবাজি হয়। তার রেশ ছড়ায় মাখড়াতেও।

কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত আগ্নেয়াস্ত্র এলাকায় আসছে কীভাবে! পুলিশ-প্রশাসন কী করছে?’’ এ দিন বীরভূম থেকে ফেরার সময় রাত্রি সাড়ে ৮টা নাগাদ বিজেপির ওই প্রতিনিধি দল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেখ আব্দুল সালামকে দেখতে যান। আব্দুল সালাম বলেন, ‘‘মাঠে কাজ করার সময়ে পায়ে শাবল, রড দিয়ে মারে তৃণমূলের ৪-৫ জন। কোনওরকমে পালিয়ে বেঁচেছি।’’ এরপর তাঁরা নবাবহাটের এক হাসপাতালে শেখ লালনকেও দেখতে যান। রূপা বলেন, ‘‘আক্রান্ত গ্রামগুলিতে ঘুরেছি। সমবেদনা জানানো ছাড়া এখন কিছু করার নেই। পুলিশও তৃণমূলের সঙ্গে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। গণতন্ত্রে যে বিরোধীদের জায়গা আছে তা ভুলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE