Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গন্ধটা খুব সন্দেহজনক: মমতা

মঙ্গলবার সন্ধ্যা প্রায় সাতটা। নবান্নের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। পুলিশকর্তারা যে যার পজিশনে টানটান। চোদ্দো তলা থেকে নেমে লিফ্‌টের সামনে থমকে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপেক্ষমাণ পুলিশ ও সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘কী একটা পোড়া গন্ধ আসছে না? আপনারা পাচ্ছেন না?’

সোমনাথ চক্রবর্তী, দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০০:৪৭
Share: Save:

মঙ্গলবার সন্ধ্যা প্রায় সাতটা। নবান্নের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। পুলিশকর্তারা যে যার পজিশনে টানটান। চোদ্দো তলা থেকে নেমে লিফ্‌টের সামনে থমকে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপেক্ষমাণ পুলিশ ও সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘কী একটা পোড়া গন্ধ আসছে না? আপনারা পাচ্ছেন না?’’ অধিকাংশই নীরব। কেউ কেউ বললেন, হ্যাঁ পাচ্ছি। পাশেই ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। কোথা থেকে গন্ধ আসছে, পুলিশকর্তাদের অবিলম্বে তা দেখার নির্দেশ দিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী।

তড়িঘড়ি ফোন গেল হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহের কাছে। শিবপুর থানাকে গন্ধের উৎস খুঁজতে নির্দেশ দিয়ে হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে ফোন করলেন কমিশনার। খবর গেল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেও। রাত থেকেই শুরু হয়ে গেল খানা-তল্লাশি।

জানা যায়, রাজ্যের সদর দফতর নবান্ন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে চলছিল প্লাস্টিক ও ত্রিপল পুড়িয়ে রান্না। পাশেই ট্রাফিক গার্ড-সহ নিরাপত্তা কর্মী এবং জেলা দূষণ নিয়ন্ত্রণ দফতরের অফিস। তবে কারও নজরে পড়া দূরে থাক, পোড়ার কটু গন্ধও পাননি কেউ। টের পেলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী!

পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে খবর, বিদ্যাসাগর সেতু ট্রাফিক গার্ডের অফিসের পিছনে কিছু লোক প্লাস্টিক ও ত্রিপল জ্বালিয়ে রান্না করছিলেন। পুলিশ তাঁদের আগুন জ্বালাতে বারণ করে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। ওই ব্যক্তিরা পেশায়
মিস্ত্রী বলে জানায় পুলিশ। এলাকায় কাজ চলার সূত্রে তাঁরা ওখানে ছিলেন।

বুধবার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ কমিশনার আমাকে বিষয়টা জানান। সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার কয়েক জন অফিসার ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের পাঠানো হয়। তল্লাশি চালায় পুলিশও। অবশেষে গন্ধের উৎস জানা যায়।’’

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আশপাশে কোথাও প্লাস্টিক বা রাসায়নিক কারখানা রয়েছে কি না, বুধবার দিনভর তা খতিয়ে দেখেন পর্ষদের অফিসারেরা। তল্লাশি চালায় পুলিশও। তবে এখনও তেমন কোনও কারখানার সন্ধান মেলেনি। এ দিনই এ বিষয়ে পুলিশের রিপোর্ট নবান্নে জমা পড়েছে।

এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল বছর দুয়েক আগে। মহাকরণে স্বরাষ্ট্র (প্রেস) বিভাগে রেকর্ড রুমে কীটনাশক ছড়ানোর সময়ে কেরোসিনের তীব্র গন্ধ বেরোয়। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণ ছেড়ে নবান্নে চলে এসেছেন। তাঁর কাছে খবর যায়, মহাকরণ পোড়াতেই দাহ্য পদার্থ জড়ো করা হয়েছে। আলোড়ন পড়ে যায়। সাসপেন্ডও হন ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। এ বার নবান্নের ঘটনায় কেউ ‘কোপে’ পড়েন কি না, গুঞ্জন তা নিয়েই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE