খাগড়াগড়ের বাড়ি থেকে নমুনা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হল খাগড়াগড় ও বাবুরবাগের দুই বাড়ি মালিককে।
রবিবার খাগড়াগড়ে হাসেম চৌধুরীর বাড়িতেই বাবুরবাগের বাড়ির মালিক আব্দুল রেজ্জাককে ডেকে পাঠান এনআইএ-র কর্তারা। তবে অসুস্থ থাকায় নিজে না এসে ভাগ্নে ওমর চৌধুরীকে পাঠিয়েছিলেন আব্দুল রেজ্জাক। তাঁদের মূলত হাবিবুর ও কওসর সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এই হাবিবুর ও কওসরই ভুয়ো পরিচয়ে স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম আবুল কাসেমের সাহায্যে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল বাবুরবাগে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্তও এরাই। এ দিন বাকিদের সঙ্গে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করা হয় আবুল কাসেমকেও। যদিও জঙ্গিদের সম্পর্কে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, আর কোনও সূত্র মিলেছে কি না তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি এনআই কর্তারা। জেরার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই ইমাম ও হাসেম চৌধুরীও। তবে ওমর চৌধুরী জানিয়েছেন, হবিবুর ও কওসরের বিষয়ে এ দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ। তিনি জানান, ওই বাড়িতে যে দু’জোড়া দম্পতি বাস করতেন, তাঁদের মধ্যে হাবিবুরের দাড়ি ছিল। তুলনায় রোগা ও লম্বা ছিল সে। অন্যদিকে, কওসরের দাড়ি নেই, তুলনায় স্বাস্থ্যবান সে। কওসর বাড়ির ভেতর মোটরবাইক নিয়ে ঢুকতেন, মাথা ও মুখ সবসময়েই হেলমেটে ঢাকা ঢাকা থাকত বলে জানিয়েছেন ওমর। দুই মহিলাকেও বোরখাপড়া অবস্থায় দেখা যেত। ওমর আরও জানান, তিনি বা তাঁর পরিবারের কারও দোতলায় ওঠার অনুমতি ছিল না। বাড়ির মূল দরজাও সবসময়েই বন্ধ থাকত। প্রায় তিন মাস ওই বাড়িতে ছিলেন তাঁরা। তবে বিস্ফোরণের দিন সন্ধ্যা থেকেই গা ঢাকা দেন তারা। পরে ওই বন্ধ বাড়ি তল্লাশি করে দুটি নাইন এমএম পিস্তল, কিছু বই, লোহার যন্ত্রপাতি যেমন রেঞ্জ, প্লাস ইত্যাদি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। মেলে বেশ কিছু রাসায়নিকও। তবে এনআইএ-র এক সূত্রের খবর, ওই বাড়িটি ছিল অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার আগে বিস্ফোরক মজুত করার জায়গা।
বর্ধমানের হাটুদেওয়ান পীরতলার একটি বাড়িতেও কাপড়ের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে থাকতে শুরু করেছিল দুই দম্পতি। পরে বাড়িটি থেকে একটি সেলাই মেশিন, কিছু জেহাদি বইপত্র ও প্রচুর ফোন নম্বর উদ্ধার করে সিআইডি। ওই বাড়ির মালিক শেখ মনোয়ার জানিয়েছেন, শেখ তালেব নামে একজন নিজেদের কীর্ণাহারের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। পরে ঈদের আগে ওই দু’জোড়া দম্পতি বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যায়। পরে ফোনে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
রবিবার দুপুর নাগাদ রাজ্য সিআইডি ও জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে খাগড়াগড়ের বাড়িতে হাজির হয় এনআইএ দল। সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে এ যাবদ যত রাসায়নিক, আসবাবপত্র, অস্ত্র, নানা যন্ত্রপাতি, লেদ মেশিন ইত্যাদি মিলেছিল তা তালিকা মিলিয়ে দেখা হয়। বর্ধমান থানা এবং সিআইডিও আলাদা ভাবে যে তালিকা তৈরি করেছিল তাও মিলিয়ে দেখে হয়। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে জানাতে চাননি এনআইএ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy