Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নথিভুক্তির জটে রফতানি বন্ধ আনাজের

কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা নেই। চাহিদাও প্রবল। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশ কিছু কৃষিপণ্যের বিদেশে রফতানি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।কারণ? মরসুমি আনাজ রফতানির জন্য এখন কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না। কেন?

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৩
Share: Save:

কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা নেই। চাহিদাও প্রবল। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশ কিছু কৃষিপণ্যের বিদেশে রফতানি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

কারণ? মরসুমি আনাজ রফতানির জন্য এখন কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না। কেন? বিদেশে পণ্য রফতানি করতে ইচ্ছুক কৃষক বা কৃষি সমবায়ের নাম নির্দেশিকা মেনে নথিভুক্ত করছে না রাজ্য সরকার। রফতানিকারীদের তালিকা না-থাকায় নানা ধরনের কৃষিপণ্যের রফতানি আটকে গিয়েছে।

অথচ বিদেশের বিভিন্ন বাজারে পশ্চিমবঙ্গের মরসুমি তরিতরকারির কদর খুব। গ্রীষ্মে কালের পটল-ঢেঁড়স, শীতের বাঁধাকপি-লালশাক-কুমড়োশাক-পুঁইশাক ইউরোপে বাজারে দেদার বিক্রি হয়। বিষাক্ত কীটনাশক ও পোকামাকড়মুক্ত এই ধরনের কৃষিপণ্য যাতে ইউরোপের বাজারে আরও বেশি পরিমাণে রফতানি হতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে কৃষকদের নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক। নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, শুধু চাষি নয়, কৃষক সমবায় ও খামারগুলির নামও নথিভুক্ত করা যাবে।

কিন্তু বছর দেড়েক আগে জারি করা সেই নির্দেশিকা মেনে কাজ হয়নি এ রাজ্যে। নবান্নের এক কর্তা জানান, বাংলার ঢেঁড়স, পটল, বেগুন, চিচিঙ্গে, কচুশাক ও পাটশাকের উপরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু রাজ্য সরকার কৃষক বা কৃষি সমবায়ের নাম নথিভুক্ত করে সেই তালিকা দাখিল না-করায় মরসুমি আনাজ রফতানির জন্য অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্র।

এই অনুমোদনের দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ন্যাশনাল প্ল্যান্ট প্রোটেকশন অর্গানাইজেশন’ বা এনপিপিও। তারা কৃষিপণ্যের গুণগত মান বিচারের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত চাষের পরামর্শও দিয়ে থাকে। নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যের হাতে যেহেতু নথিভুক্ত কৃষকের নামের তালিকা নেই, তাই পটল, ঢেঁড়স-সহ বিভিন্ন আনাজ রফতানির ছাড়পত্র দিতে অস্বীকার করছে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা।

রফতানিকারী সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, তারা এই ব্যাপারে রাজ্যের উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছে। দফতরের মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লাও আগ্রহী কৃষক ও সমবায় সংস্থার নাম দ্রুত নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও সেই কাজ না-এগোনোয় নবান্নের একটি মহল বিস্মিত। যদিও মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা-সহ অন্যান্য ফল-তরিতরকারি উৎপাদক রাজ্য নাম নথিভুক্তির কাজ অনেকটাই সেরে ফেলেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইউরোপের দেশগুলিও। তারা জানিয়েছে, পণ্যের মান নিয়ে কোনও ভাবেই আপস করা যাবে না। সেই জন্য পণ্য সরবরাহকারীর জমি ও ফসল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে। যাতে রফতানির পরে কোনও পণ্য নিয়ে অভিযোগ উঠলে সহজেই সেই কৃষক বা জমিটিকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

অচলাবস্থা কাটাতে কী ব্যবস্থা করছে সরকার? ‘‘রফতানিতে ইচ্ছুক কৃষক ও কৃষি সমবায়ের নাম নথিভুক্ত করার কাজ কতটা এগিয়েছে, আধিকারিকদের কাছে তার রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে,’’ বলছেন মন্ত্রী রেজ্জাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vegetables Export
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE