তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের উস্কানিমূলক উক্তি নিয়ে সিআইডি তদন্তের উপরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য তার আগেই, ১০ তারিখে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নিশীথা মাত্রের আদালতে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি শুরু হয়ে যাবে। মঙ্গলবার মামলাটি বিচারপতি মাত্রের আদালতে ওঠার পরে তিনিই এই মর্মে নির্দেশ দেন।
গত ১৪ জুন নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা এলাকায় কয়েকটি জনসভায় উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য পেশ করার অভিযোগ উঠেছে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপসবাবুর বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই সাংসদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না-নেওয়ায় বিপ্লব চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে মামলা করেন। ২৮ জুলাই হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ (বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের আদালত) নির্দেশ দেয়, সাংসদের উস্কানিমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে হবে সিআইডি-কে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাপসবাবু এবং রাজ্য সরকার হাইকোর্টেরই ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন।
কিন্তু বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির নিষ্পত্তি হয়নি। গত ১৩ অগস্ট ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, মামলার রায় নিয়ে সব প্রশ্নেই দুই বিচারপতি ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। বিচারপতি গুপ্ত সে-দিন জানান, তিনি সিঙ্গল বেঞ্চ (বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের)-এর রায় খারিজ করে দিচ্ছেন। তাপস পাল ও রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে যে-আপিল করেছেন, সেটি গ্রহণ করছেন তিনি। সেই সঙ্গে ওই সাংসদের উক্তি ও মন্তব্যের ব্যাপারে সিআইডি তদন্তের নির্দেশও খারিজ করে দেওয়ার পক্ষে মত দেন বিচারপতি গুপ্ত। তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রে তদন্ত করা উচিত পুলিশেরই।
ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী সে-দিন জানান, তিনি সিঙ্গল বেঞ্চের সিআইডি তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখছেন। খারিজ করে দিচ্ছেন সাংসদ ও সরকারের আপিল। পরে হাইকোর্টেরই এক আইনজীবী লিখিত আবেদনে জানান, কেন দুই বিচারপতি একমত হতে পারলেন না, ডিভিশন বেঞ্চ তা জানাক। তার ভিত্তিতে ২৭ অগস্ট ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আংশিক বা একটি-দু’টি প্রশ্নে মতভেদ নয়। এই মামলায় কোনও ক্ষেত্রেই দুই বিচারপতির মধ্যে মতের মিল হয়নি।
ঐকমত্যের অভাবে ডিভিশন বেঞ্চে মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়ায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কার্যালয় থেকে ২৯ অগস্ট মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিচারপতি মাত্রের কাছে। এই মামলার নিষ্পত্তি হবে বিচারপতি মাত্রের আদালতেই।
ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি তাপস-মামলার নিষ্পত্তি করতে না-পারলেও তাঁরা ওই সাংসদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে সিআইডি তদন্তের নির্দেশের উপরে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করেন। মঙ্গলবার সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিচারপতি মাত্রে এ দিন সেই স্থগিতাদেশের সময়সীমা ১৭ দিন বাড়িয়ে দেন। তবে তার আগেই নতুন করে শুনানি শুরু হবে বলে জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy