অনেকটা যেন ব-দ্বীপের মতো। তিন দিকে বিরোধীদের ঘাঁটি। সেই ঘাঁটিতেই এ বার পা রাখতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী কাল, শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ন্যাজাটে প্রশাসনিক বৈঠক করতে যাচ্ছেন মমতা। বিজয় সঙ্ঘের মাঠে তাঁর সভা। এই বৈঠক প্রশাসনিক হলেও, দলের কর্মী-সমর্থকদের সেই সভায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। কারণ, সামনে বিধানসভা ভোট। গত বিধানসভা ভোটে জেলার ৩৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিরোধীদের দখলে যে চারটি জুটেছিল তার সব কটিই এই বসিরহাট মহকুমায়। ন্যাজাটের তিন দিক ঘিরে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বসিরহাট দক্ষিণে রয়েছে বিজেপির বিধায়ক, সন্দেশখালিতে সিপিএমের, হিঙ্গলগঞ্জে সিপিআই। কিছুটা দূরে বাদুড়িয়াও কংগ্রেসের। এর মধ্যে বসিরহাট উত্তর এবং মীনাখাঁ বিধানসভা কেন্দ্রে জিতেছিল তৃণমূল। এ বার তাদের লক্ষ্য, তিন কেন্দ্র বিরোধী শূন্য করা। তাই, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক ঘিরে বসিরহাটে এখন তৃণমূলেও সাজো সাজো রব।
প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী আগে উত্তর ২৪ পরগনার নানা জায়গায় গিয়ে সভা করেছেন। সরকারের ইচ্ছে, এখানকার উন্নয়ন মমতা নিজে উপস্থিত থেকে সকলকে এক বার দেখিয়ে দিন। নদীমাতৃক এই এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম সভা তাই সরকারের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত মমতার ইচ্ছেতেই এখানে প্রশাসনিক বৈঠক হচ্ছে। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন বা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা এখানে কোনও সভা করেছেন কি না, তা দলের নেতাদের অনেকেই মনে করতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তাঁদের অনেকেই এখানে সভা করানোর অনুরোধ করেছিলেন। সে কথা জানিয়ে দলের জেলা সভাপতি বলেছেন, ‘‘এখানে সভা করতে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম। উনি সেটা অনুমোদন করেছেন।’’ তাই এই সভা সরকারি হলেও জেলা তৃণমূলই কার্যত যাবতীয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ এবং জেলার কার্যকরী সভাপতি নারায়ণ গোস্বামীকে সভার ব্যবস্থাপনার ভার দেওয়া হয়েছে। সভা ভরাতে দলের তরফে এই মহকুমার প্রতিটি বিধানসভা এলাকা থেকে সাত হাজার দলীয় সমর্থক হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক নিয়ে আসা গাড়িগুলি রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা যুব তৃণমূলকে। যাঁরা সভায় আসবেন, তাদের জন্য জলসত্র খোলার ভার দেওয়া হয়েছে দলীয় ছাত্র সংগঠনকে।
ন্যাজাটে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিতে রয়েছে ৭৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৬৭টি প্রকল্পের শিলান্যাস। ভোটের আগে ন্যাজাটের বিরোধী ঘাঁটি ভাঙতে ওই প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাসই দলনেত্রীর হাতিয়ার হয়ে উঠবে বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশের অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy