কিছু দিন আগেই সিঙ্গাপুরে গিয়ে নিউটাউনের অর্থতালুকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই অর্থতালুকে লগ্নি টানতে সম্প্রতি চেন্নাইয়ে শিল্পপতিদের যে সভা ডেকেছিল রাজ্য, সেখানে যেতেই পারলেন না রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কারণ, উপনির্বাচনের কাজে ‘ব্যস্ত’ তিনি।
হিডকো সূত্রের খবর, অর্থতালুকের জন্য মূলত দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে বিনিয়োগ টানতে ১৫ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে শিল্প-বৈঠক ডাকা হয়েছিল, যার পোশাকি নাম ‘রোড-শো’। আমন্ত্রিত ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের জানানো হয়েছিল, অর্থতালুকের দায়িত্বে থাকা রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করবেন। অর্থতালুক নিয়ে একটি ‘প্রেজেনটেশন’ দেবে হিডকো।
বৈঠক সূচি মেনেই হয়েছিল। সেখানে ছিলেন হিডকোর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস সেন। তিনি জানিয়েছেন, “বৈঠকে দক্ষিণের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। তাঁদের সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।” কিন্তু, যাঁর কথা শোনার জন্য আমন্ত্রিতরা হাজির হন, রাজ্যের সেই মন্ত্রী থেকে যান কলকাতায়। বদলে তাঁর একটি ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। কিন্তু এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ শিল্প বৈঠকে কেন তিনি গেলেন না? ফিরহাদ এই প্রশ্নের জবাব এড়ালেও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, উপনির্বাচনের কাজের জন্যই মন্ত্রী যেতে পারেননি।
রাজ্যের দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে ১৩ সেপ্টেম্বর। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ভোট নিয়ে কত জরুরি কাজ থাকতে পারে, যার জন্য মন্ত্রী দু’দিন পরেও চেন্নাই যেতে পারলেন না? তাঁর অনুপস্থিতির জন্য ওই ‘রোড-শো’ কার্যত ‘ফ্লপ’ হয়েছে বলেই মনে করছেন হিডকো কর্তারা। এই ঘটনার কথা জেনে শিল্পমহলের একাংশ মন্তব্য করেছেন, শিল্পে বিনিয়োগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মনোভাব আসলে কী, এ বিষয়ে তারা কতটা আন্তরিক চেন্নাইয়ের ঘটনা তা আরও এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। শিল্পে খরার রাজ্যে এমন ঘটনা তাঁদের বিস্মিত করেছে।
অথচ বাম আমলের যৌথ প্রকল্পের চুক্তি বাতিল করে নিজেরাই অর্থতালুক গড়বেন বলে ক্ষমতায় এসে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর থেকে লগ্নি টানতে কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। প্রচারের অস্ত্র হিসেবে কয়েকটি রাজ্যে ‘রোড-শো’ হয়েছে।
বাম চুক্তি বাতিল করে মমতার আমলে প্রথম পর্যায়ের জন্য প্রথমে ২৫ একর, পরে আরও ৩১ একর জমি বাছা হয়। হিডকোর এক কর্তা জানান, গত দু’বছরে ১১টি সংস্থা চুক্তি করেছে, লাগবে ২০ একর জমি। এখনও ২৩টি প্লটে ৩৬ একর ফাঁকা। তার বিলি-বন্দোবস্ত করতেই বিভিন্ন শহরে ‘রোড-শো’ করার পরিকল্পনা নিয়েছে হিডকো, যার মধ্যে অন্যতম ছিল চেন্নাই শহর। আর সেখানেই যাননি ফিরহাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy