ছত্রভঙ্গ: ঝড়-বৃষ্টির দাপটে উড়ে গিয়েছে ঘরের চাল। শনিবার মালদহের গাজলে। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
মেরেকেটে মিনিট ১৫। তার মধ্যেই ঝড় ও বৃষ্টির দাপটে লন্ডভন্ড হল মালদহ জেলার পাঁচটি ব্লক। মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে ১ কিশোর-সহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন তিন জন। তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার ভোরে আচমকাই প্রবল বেগে ঝড় বয়ে যায় জেলার গাজল, বামনগোলা, হবিবপুর, রতুয়া এবং চাঁচল-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এর জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও টেলিফোন যোগাযোগ। বহু রাস্তার উপরে গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। প্রায় হাজারেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনুমান প্রশাসনের। ক্ষতি হয়েছে আম, ভুট্টা, আলু সহ বেশ কিছু ফসলের। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, মালদহের উপরে স্থানীয় ভাবে একটি বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তা থেকেই ঝড়বৃষ্টি। নির্দিষ্ট একটি এলাকার উপরে মেঘ তৈরি হওয়া এবং তা ভাঙার ফলে ঝড়ের জোর বেশি ছিল।
মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে গাজলের বকদিঘি এলাকায় মৃত্যু হয় মুকলেশ রহমানের(৫৮)। চাঁচল-২ ব্লকের ধানগারা বিষণপুরে মারা যায় মনিরুল ইসলাম (৭) নামে এক কিশোর। হাসপাতালে বামনগোলা হাই স্কুলের শিক্ষক ফিরোজ মাহালাত ও হবিবপুরের চকসুপুর গ্রামের বাসিন্দা সুরোজ টুডু ও সঞ্জয় মুর্মূ। ফিরোজ বলেন, ‘‘ঝড়ের সময় বাইরে ছিলাম। সেই সময় টিনের চালা পড়ে আমার ডান হাত কেটে যায়। তারপরে আমার আর কিছু মনে নেই।’’
এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে আচমকা ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় জেলা জুড়ে। ক্ষয়ক্ষতির জেরে এ দিন সকাল থেকেই খোলা আকাশের নিচে হাজার হাজার পরিবার। ওই পাঁচটি ব্লকে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকায় বন্ধ পানীয় জল সরবরাহ। গাছ উপড়ে বন্ধ হয়ে যায় বামনগোলা-গাজল রাজ্য সড়ক। ফলে ওই রুটে যান চলাচলও বিপর্যস্ত হয়। পরে প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর রাস্তা থেকে গাছ সরানোর কাজ শুরু করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জেলাশাসক তন্ময়কুমার চক্রবতী বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসনের কাছে দ্রুত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলির কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ এ দিন গাজলের বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেন বিধায়ক দিপালী হালদার ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রভাত পোদ্দার। প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘গ্রামে গ্রামে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনের পাশাপাশি পঞ্চায়েতেরও তরফেও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy