খবরটা এল দেবীপক্ষের সূচনায়। ক্যানসারে আক্রান্ত অশীতিপর মায়ের সঙ্গে এ বার জেলে বসে দেখা করতে পারবেন সাংসদ কুণাল ঘোষ। দু’বছর পরে দেখা হবে মা-ছেলের।
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রেফতার হন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সদস্য কুণাল। তার পর থেকে এ-পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় ২৩ মাস তাঁর দেখা হয়নি রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত মা মণিকাদেবীর সঙ্গে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মণিকাদেবী আগামী শনিবার জেলে কুণালের সঙ্গে
দেখা করতে যাবেন। খবরটা মঙ্গলবার সকালে মণিকাদেবীকে দেওয়া হয়েছে। শুনে ৮১ বছরের বৃদ্ধার প্রতিক্রিয়া, ‘‘দেখতে তো ইচ্ছা করে। কিন্তু ওই অবস্থায় ওকে দেখে ভাল লাগবে কি?’’
বছর দু’-এক আগে গ্রেফতারের পর থেকে কুণাল প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী বন্দির সঙ্গে দেখা করতে গেলে জেলের প্রধান গেট দিয়ে ঢুকে খানিকটা হেঁটে যেতে হয়। একটি করিডরে দু’স্তর জাল দিয়ে ঘেরা জানলার এক পাশে থাকেন বন্দি, অন্য পাশে সাক্ষাৎপ্রার্থী। বন্দির সঙ্গে সাক্ষাৎপ্রার্থীকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কথা বলতে হয়। কুণালের স্ত্রী শর্মিতা জানান, মণিকাদেবীর পক্ষে কোনও অবস্থাতেই ও-ভাবে ছেলের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব নয়। কারণ, আট বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত মণিকাদেবী এখন কার্যত শয্যাশায়ী। শর্মিতাদেবী এ দিন বলেন, ‘‘চিকিৎসককে দেখাতে গেলে ওঁকে স্ট্রেচারে করে উপর থেকে নামাতে হয়। অ্যাম্বুল্যান্সেও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয় মাঝেমধ্যে।’’ তাই মায়ের সঙ্গে দেখা হয়নি কুণালের। তাঁর পারিবারিক সূত্রের খবর, মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি জেল থেকে কয়েক ঘণ্টার ছুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়নি।
সম্প্রতি কুণাল জেলেই আবার অনশন শুরু করছেন। যে-সব দাবি নিয়ে তিনি অনশন শুরু করেছেন, মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়াটা তার অন্যতম। তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ করার ক্ষেত্রে যে-জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার দ্রুত সমাধানের দাবিও জানিয়েছেন কুণাল। জেল সূত্রের খবর, কুণালের দাবি নিয়ে সোমবার রাতে প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই তাঁকে জানানো হয়, এ বার থেকে তিনি জেলে বসেই তহবিলের টাকা খরচের প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। মায়ের সঙ্গে কুণালের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জেল-কর্তৃপক্ষ জানান, জেলের কোনও একটি ঘরে এসে মণিকাদেবী ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু’জনের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করেই সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
জেল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই দু’টি দাবি মেনে নেওয়ার পরেও কুণাল অনশন তুলে নেননি। তাঁর আরও দাবি, সারদার যে-সব অভিযুক্ত দিব্যি বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। জেল-কর্তৃপক্ষ জানান, এই দাবির ব্যাপারে কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়ার এক্তিয়ার তাঁদের নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy