Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাশে থাকুন, অধীর-বার্তার দিনেই ক্ষুব্ধ রবি

কে কার পাশে দাঁড়াবে, তা নিয়েই এখন তরজা কংগ্রেসে! প্রদেশ নেতৃত্ব কর্মীদের বলছেন, মানুষের পাশে থাকতে হবে। আর জেলার নেতারা প্রদেশ নেতৃত্বকেই দুষে পাল্টা প্রশ্ন করছেন, শাসক দলের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে তাঁদের পাশে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? সোমবার কংগ্রেসের অন্দরে এই বৈপরীত্যের ছবিই ধরা পড়েছে। সোমবার দুপুরে আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কলকাতার পুর-প্রার্থীদের নিয়ে সম্মেলনে বলেন, ‘‘মানুষের পাশে থাকতে হবে।’’

২৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী প্রকাশ উপাধ্যায়কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে। —নিজস্ব চিত্র।

২৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী প্রকাশ উপাধ্যায়কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৫ ০৩:৫০
Share: Save:

কে কার পাশে দাঁড়াবে, তা নিয়েই এখন তরজা কংগ্রেসে!

প্রদেশ নেতৃত্ব কর্মীদের বলছেন, মানুষের পাশে থাকতে হবে। আর জেলার নেতারা প্রদেশ নেতৃত্বকেই দুষে পাল্টা প্রশ্ন করছেন, শাসক দলের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে তাঁদের পাশে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? সোমবার কংগ্রেসের অন্দরে এই বৈপরীত্যের ছবিই ধরা পড়েছে। সোমবার দুপুরে আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কলকাতার পুর-প্রার্থীদের নিয়ে সম্মেলনে বলেন, ‘‘মানুষের পাশে থাকতে হবে।’’ প্রায় একই সময়ে বিধানসভায় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের কক্ষে প্রদেশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন কাটোয়ার বিধায়ক তথা পরিষদীয় দলের উপ-নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মূল অভিযোগ, পুলিশ ও তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রদেশ নেতাদের কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না কাটোয়ার নেতা-কর্মীরা।

কলকাতা পুরভোটে দলের পাঁচ জয়ী কাউন্সিলর-সহ ১৪৩ জন প্রার্থীর উপস্থিতিতে এ দিন আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে অধীর বলেন, ‘‘হারে ভয় পাবেন না। ভোটের সময় মানুষকে তো আপনারা কথা দিয়েছিলেন, তাঁদের পাশে থাকবেন। তা বলে থাকলে কথার দাম রাখতে আগামী পাঁচ বছর নিজের নিজের ওয়ার্ডে মানুষের পাশে থাকুন।’’ অধীরের দাওয়াই, ‘‘মানুষের বিপদে শুধু টাকা দিয়ে সাহায্য করা নয়। কখনও সহানুভূতি দিয়ে, কখনও হয়তো প্রয়োজনে রক্ত জোগাড় করে দিয়ে সাহায্য করলেন।’’ এ ভাবে পাশে থাকলে মানুষই আগামী দিনে তাঁদের ভোটে জেতাবেন বলে অধীর কলকাতার কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। এ দিন অধীরের বক্তৃতার আগে কলকাতার একাধিক প্রার্থী প্রদেশ সভাপতির সামনেই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ভোটে লড়তে গিয়ে প্রদেশ নেতৃত্বের সহযোগিতা তাঁরা পাননি। তাঁদের ক্ষোভ নিরসনেই অধীরের এই জনসংযোগের বার্তা বলে কংগ্রেস নেতাদের একাংশের ধারণা।

কলকাতার প্রার্থীদের সুরেই কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবুও এ দিন বিধানসভায় প্রদেশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কংগ্রেস পরিষদীয় দলের এক নেতার দাবি, সোমবার বিধায়ক মইনুল হক, সাধারণ সম্পাদক অজয় ঘোষ এবং অধীর-ঘনিষ্ঠ বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর উপস্থিতিতেই রবীন্দ্রনাথবাবু দাবি করেন, পুরভোট পর্বে তিনি এবং দলের কর্মীরা কী ভাবে কাটোয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন, তা অধীরকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সুরাহার দিশা না দিয়ে অধীর তাঁকে গাঁধী মূর্তিতে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছিলেন! কাটোয়ার বিধায়কের এমন অভিযোগ শুনে অধীর পাল্টা বলেন, ‘‘আমি এই ধরনের অভিযোগ শুনে স্তম্ভিত! তবে রবিদার সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। উনি ঠিক কী বলেছেন, আমি জানি না। ওঁর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে যা বলার বলব।’’

রবীন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। কাটোয়ায় দলের ৮৪ জন কর্মী-সমর্থক মিথ্যা মামলায় জেলে এবং শতাধিক কর্মী ঘরছাড়া। জয়ী কংগ্রেস কাউন্সিলরদেরও মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কোনও সদিচ্ছা প্রদেশ নেতৃত্ব দেখাননি বলে এ দিন রবীন্দ্রনাথবাবু ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিধানসভায় রবীন্দ্রনাথবাবুর এ দিনের ক্ষোভ প্রসঙ্গে পরে অধীর-ঘনিষ্ঠ মনোজবাবু বলেন, ‘‘রবিদা ক্ষোভের কথা বলছিলেন আমাদের। তবে কাটোয়ায় ঘটনার পরের দিনই তো অধীরবাবু ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন! রবিদার সঙ্গে ফোনেও কথা বলেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE