নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগে মাস চারেক আগে কয়েকজন দুষ্কৃতীকে এলাকাছাড়া করেছিলেন গ্রামবাসী। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে এ বার গ্রামবাসীর উপর পাল্টা হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ।
মঙ্গলবার ভোররাতে ঘটনাটি ঘটেছে নয়াচরে। নির্যাতিতার অভিযোগ পেয়ে আতিউর সর্দার নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে আজ, বুধবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে। ওই মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষাও হবে আজ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের হামলায় চারজন আহত হয়েছেন। এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগে ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কেন এই হামলা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকার লোকজন নয়াচরের ভেড়িতে মাছ চাষ করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাকদ্বীপের রামতনুনগরের রফিক সর্দার, ফিরোজ নস্কর, আতিউর সর্দারদের এখানে মাছের ভেড়ি ছিল। কিন্তু আতিউররা স্থানীয়দের উপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। পুলিশের খাতাতেও তাদের নাম রয়েছে। এলাকাবাসীর চাপেই মাস চারেক আগে তাদের এলাকা ছাড়তে হয়। তবে তারপরও রাতে তারা এলাকায় এসে অশান্তি করত বলে অভিযোগ।
কী ঘটেছিল মঙ্গলবার ভোররাতে?
অভিযোগ, আতিউর সর্দার-ফিরোজ নস্করের নেতৃত্বে ১০-১২জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা গ্রামে হানা দেয়। প্রথমে তারা এলাকার এক ভেড়িমালিক ও তার স্ত্রীর উপর অত্যাচার করে। এমনকী বাড়ি থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে বছর চল্লিশের ওই মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। এরপর ওই এলাকারই অন্য এক ভেড়ি মালিক ও তাঁর স্ত্রীকেও মারধর করা হয়। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নির্যাতিতার স্বামী বলেন, ‘‘আমাকে আর আমার স্ত্রীকে আলাদা করে দেওয়া হয়। আমার বাঁ হাত ভেঙে গিয়েছে। সকালে আমার স্ত্রী জানান, তাঁকে গণধর্ষণ করেছে দুষ্কৃতীরা।’’
দুষ্কৃতীদের মারে জখম আরও এক ভেড়ি মালিকের অভিযোগ, ‘‘ওই দুষ্কৃতীরা এলাকায় দাদাগিরি করত, জোর করে টাকা আদায় করত। সেজন্য আমরা ওদের তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। ওরা প্রতিহিংসা নেওয়ার জন্যই এ দিন হামলা চালায়।’’ নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বনবিহারী পাল বলেন, ‘‘নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগ পেয়ে মাস চারেক আগে ওই দুষ্কৃতীদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবু রাতের অন্ধকারে ওরা অনেকের উপর অত্যাচার করছিল বলে শুনেছিলাম। তবে এ বার যে ঘটনা ঘটল তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy