নিউটাউনে জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত সেন্টার তৈরির জন্য চার কোটি টাকা জমা দিয়েও গত চার বছর ধরে ঘুরছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা! কিছুতেই জমি পাচ্ছেন না। বাম জমানার শেষ দিকে তাঁদের জন্য যে পাঁচ একর জমি বণ্টন করেছিলেন তৎকালীন আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেব, তা-ও পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ, বুধবার বসুর ১০২ তম জন্মদিবস। সেই উপলক্ষে সল্টলেকে আজ, বুধবার একটি আলোচনাসভায় এক মঞ্চে উপস্থিত থাকার কথা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। জ্যোতিবাবুর আমলে কাজ করা তিন জন মুখ্যসচিবকেও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব অভিযোগ করেন, তাঁরা একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মৌখিক ভাবে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বাজার চলতি সুদের হার হিসাব করলে সিপিএমের জমা দেওয়া ৪ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা তা বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। কেন তাঁরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলায় যাচ্ছেন না? জবাবে রবীন দেব বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য সরকারের শুভবুদ্ধির উপরে আশা রাখছি।’’
২০১০ সালে ১৭ জানুয়ারি বসুর মৃত্যুর পরেই সিপিএম নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন, নিউটাউনে বসুর নামাঙ্কিত সেন্টার ফর স্যোসাল স্টাডিস অ্যান্ড রিসার্চ স্থাপন করা হবে। এর জন্য গৌতমবাবুর কাছে আবেদন করলে ২০১১ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি তিনি সেক্টর-টু তে এ/১ ঠিকানায় প্রায় পাঁচ একর জমি বন্টন করেন। জমির দাম বাবদ সিপিএমের পক্ষ থেকে ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৪ কোটি ১৫ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা হিডকো কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত রবীনবাবুরা ওই জমি পাননি।
বসুর জন্মশতবার্ষিকী কমিটির সদস্য সিপিআইয়ের প্রবীর দেব, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানি, আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্যকে পাশে বসিয়ে রবীনবাবু এ দিন জানান, কী ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘হিডকো যে জমি বণ্টন করেছিল, কিছুতেই তার দখল না পেয়ে আমরা ২০১৪ সালের ২ জুন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাই। তিনি সব শুনে বলেন, এই রকম সেন্টার হলে খুবই ভাল হবে। তিনি বিষয়টি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দেখতে বলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে আমরা জমির দখল নিতে হিডকো অফিসে গেলে আমাদের বলা হয়, ওই জমি পাওয়া যাবে না।’’ রবীনবাবুর অভিযোগ, তাঁদের অন্য জমি দেখানো হয়, যা বণ্টিত জমির থেকে তিন কিলোমিটার দূরে, সেক্টর-থ্রি-তে। জমির পরিমাণও কম। সিপিএম নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া, এই জমি তাঁদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।
বিকল্প কোনও ব্যবস্থা হিডকো কর্তৃপক্ষ না করায় এ বছর আলিমুদ্দিনের নেতারা পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে বিষয়টি জানাবেন। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, হিডকো চেয়ারম্যান বিষয়টি দেখবেন। এ বছর ২৩ জুন সিপিএম নেতৃত্ব যাওয়ার পরে হিডকো কতৃর্পক্ষ আবার আর একটি নতুন জমি দেখান! যা চার একরেরও কম। স্বাভাবিক ভাবেই ওই জমি নিতে অস্বীকার করেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁরা বলেন, তাঁদের নামে যে প্রথম জমিটি বণ্টন করা হয়েছিল, সেটাই দিতে হবে। হিডকো চেয়ারম্যান জানান, ওই জমি দেওয়া যাবে না। ওই জমির একটা অংশ নিয়ে মামলা হচ্ছে। মঙ্গলবার রবীনবাবু হিডকোর চেয়ারম্যানের কাছে মামলার কাগজ চেয়েছেন। হিডকো রবীনববুদের জানিয়েছেন, তাঁরা আবেদন করলে পরে দেখা যাবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy