মাছ ধরার আনন্দে মেতেছেন মৎস্যজীবী। ওন্দার সিরসাড়া গ্রামে অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।
বৃষ্টি কমে যাওয়ায় বুধবার জলমগ্ন এলাকার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি ধরায় দক্ষিণ পুরুলিয়ার থানা এলাকাগুলি এ দিন আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জনজীবন। নাগাড়ে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় এলাকার নদী-খাল উপচে জল রাস্তা ও সেতু ভাসিয়ে দিয়েছিল। এ দিন অবশ্য নদীগুলিতে জলে টান দেখা গিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে মানবাজার-বরাবাজার রাস্তায় দুয়ারশিনি ঘাটে কুমারী নদীর জল সেতু উপচে বইতে থাকায় প্রায় সারাদিন ওই রাস্তায় যান চলাচল করেনি। বিকেলের পর থেকে জল সেতুর তলায় বইতে আরম্ভ করলে দু’-একটি ছোট গাড়ি ঝুঁকি নিয়ে পারপার শুরু করে। বুধবার সকাল থেকে অবশ্য ওই সেতুতে স্বাভাবিক যান চলাচল করে। মানবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রভাত মাহাতো বলেন, ‘‘বছর আটেক আগে জলের তোড়ে সেতুর দু’পাশের সংযোগকারী রাস্তা ভেঙে গিয়েছিল। সেই সময় জলের ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য পাথর ও কংক্রিট দিয়ে দু’পাশে অতিরিক্ত গার্ডওয়াল দেওয়া হয়েছিল। সে জন্য এ বারে সেতুতে কোনও ক্ষতি হয়নি।’’
মানবাজার ১ বিডিও সায়ক দেব বলেন, ‘‘ব্লক এলাকা থেকে বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও মেলেনি। কামতা যাওয়ার রাস্তায় চাকা নদীর ওপর কজওয়ের সংযোগ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই অংশ মেরামত করা হবে। এ ছাড়া জেলা থেকে ত্রাণের জন্য আগেই ত্রিপল মজুত করা আছে।’’ বান্দোয়ানের বিডিও মধুসূদন মণ্ডল বলেন, ‘‘কোন গ্রামের কোন রাস্তা কতটা খারাপ হয়েছে তার বিশদ তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এখনও সম্পূর্ণ তথ্য মেলেনি। নদী এবং স্থানীয় খালগুলিতে জল অনেকটা নেমে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পুরুলিয়ার নদী এবং খালগুলি খরস্রোতা। এ কারণে জল বেশিক্ষণ দাঁড়ায় না। রোদ উঠলে কিছু কাঁচা বাড়ি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিডিওদের এ বিষয়ে জেলা থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এক নজরে
• কংসাবতী ও কুমারী নদী ফুলে ওঠায় রবিবার থেকেই বাঁকুড়ায় মুকুটমণিপুর জলাধার ৩০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু করেছে। বুধবারও সমপরিমাণ জল ছাড়া হয় বলে জানিয়েছেন কংসাবতী সেচ দফতরের খাতড়া মহকুমার আধিকারিক সৌরভ দাস।
• জেলার কোনও অংশ প্লাবিত না হলেও দক্ষিণ বাঁকুড়ার বেশ কিছু কজওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে।
• বান্দোয়ানের ভালু জলাধারের নীচের অংশ জলমগ্ন থাকায় ২০টি শবর পরিবারকে সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হাইস্কুলে তাঁদের সরিয়ে আনা হয়েছিল। বুধবার জল সরে যাওয়ায় তাঁদের গ্রামে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
• বলরামপুর ব্লকের অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের রাস্তা ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।
• কুমারী নদীর দুয়ারসিনি ঘাটে সেতুর ওপরে জল উঠে যাওয়ায় মঙ্গলবার মানবাজার-বরাবাজার থানার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। বুধবার থেকে স্বাভাবিক ভাবে যান চলাচলে করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy