Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মোটা টাকায় বিকোচ্ছে টেট-এর নকল নিয়োগপত্র

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ‘টেট’ পরীক্ষা হতে মাসখানেক বাকি। অথচ তার আগেই নিয়োগপত্র পেয়ে গেলেন বেশ কিছু পরীক্ষার্থী! পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অবশ্য জানাচ্ছে, ওই নিয়োগপত্র আগাগোড়া জাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৭
Share: Save:

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ‘টেট’ পরীক্ষা হতে মাসখানেক বাকি। অথচ তার আগেই নিয়োগপত্র পেয়ে গেলেন বেশ কিছু পরীক্ষার্থী!

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অবশ্য জানাচ্ছে, ওই নিয়োগপত্র আগাগোড়া জাল। পরীক্ষার্থীদের বোকা বানিয়ে একটি চক্র তাঁদের কাছে মোটা টাকার বিনিময়ে ওই নিয়োগপত্র বিক্রি করেছে। এমন বেশ কিছু জাল নিয়োগপত্র হাতেও এসেছে পর্ষদ কর্তাদের।

শনিবার পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, টেট পরীক্ষার দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৩০ অগস্ট। প্রায় ২১ লক্ষ ছেলেমেয়ে পরীক্ষায় বসবেন। শূন্য পদের সংখ্যা কয়েক হাজার। পর্ষদের এক কর্তা জানান, ওই জাল নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর তাঁরা প্রাথমিক ভাবে খোঁজখবর নিয়েছেন। তাতে জানা গিয়েছে, একটি চক্র নিজেদের পর্ষদের কর্তা এবং প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে বেশ কিছু পরীক্ষার্থীকে ওই নিয়োগপত্র বিক্রি করেছে। এমনকী নিয়োগপত্রে পর্ষদ কর্তাদের নকল সই-ও রয়েছে। বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্তা।

প্রশ্ন উঠেছে, পরীক্ষা হওয়ার আগেই কী করে নিয়োগপত্র নিতে রাজি হলেন ওই পরীক্ষার্থীরা?

পর্ষদের ওই কর্তার দাবি, এ বিষয়ে নিয়োগপত্র-প্রাপকদের কয়েক জনের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। চক্রের লোকেরা ওই পরীক্ষার্থীদের বলেছে, ৩০ অগস্টের নির্ধারিত টেট পরীক্ষাটি হবে ‘লোক দেখানো’। আসলে সমস্ত নিয়োগই হবে পর্ষদের ভিতর থেকে। তাই তাদের টাকা দিলেই কাজ হয়ে যাবে। ওই মিথ্যা আশ্বাসের ফাঁদে পড়ে যাঁরা টাকা দিয়েছেন তাঁরাই নকল নিয়োগপত্র পেয়েছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অবশ্য অভিযোগ, টেট-এ আগেই বড় ধরনের কেলেঙ্কারি হয়েছে। যোগ্যতামানের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে নিয়োগপত্র পেয়েছেন অনেকে। তারই সুযোগ নিয়েছে এই চক্রটি।

বিষয়টি সম্পর্কে পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সরাসরি কিছু জানাতে অস্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের কোনও সম্ভাবনাই নেই। যদি কেউ কোনও ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে নিয়োগপত্র পেয়ে থাকেন, তবে সেই দায়িত্ব প্রার্থীদেরই নিতে হবে। এটা পর্ষদের দায়িত্ব নয়।’’ তিনি জানান, ৩০ অগস্ট পরীক্ষা হবে রাজ্যের ৫২০০ কেন্দ্রে। প্রস্তুতি একেবারে শেষ পর্যায়ে। পরীক্ষা ছাড়া কোনও ভাবেই নিয়োগের সম্ভবনা নেই। পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘কেউ কোনও প্রতারণায় পা দেবেন না।’’

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘শিক্ষা দফতর কোনও বেআইনি কিছু বরদাস্ত করেনি, করবেও না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE