Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
বেহাল চা-বাগান

মোদী-মমতাকে বিঁধলেন অধীর

উত্তরবঙ্গের চা বাগানের দুরবস্থা নিয়ে একযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

ছবি:  দীপঙ্কর ঘটক

ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৪২
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের চা বাগানের দুরবস্থা নিয়ে একযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

মঙ্গলবার ডুয়ার্সের মালবাজারের বাগরাকোট চা বাগানে ত্রাণসামগ্রী বিলি করতে এসে এক জনসভায় তাঁর কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজেকে চা বিক্রেতার ছেলে বলে দাবি করেন। অথচ তাঁর দেশে চা শ্রমিকেরাই অনাহারে মারা যাচ্ছেন। উনি খোঁজও নিচ্ছেন না। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডুয়ার্সে হেলিকপ্টারে করে এসে মালিকদের চা বাগান থেকে হটিয়ে দেবেন বলছেন।’’

ঘটনাচক্রে, বাগরাকোট চা বাগানটি ডানকান গোষ্ঠীর অধীনে রয়েছে। এই প্রসঙ্গেই ডানকান গোষ্ঠীর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের আঁতাতের অভিযোগ তুলে অধীরবাবুর হুমকি, কলকাতায় ডানকানের সদর দফতরে তাঁরা বিক্ষোভে বসবেন।

তাঁর এই ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি’র পরিকল্পনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজ-এর কর্ণধার গৌরীপ্রসাদ গোয়েন্‌কা। তবে বাগান বন্ধ, সেখানে অনাহারে শ্রমিকের মৃত্যু বা শ্রমিকদের মজুরি না-পাওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি তিনি। এ দিন তিনি দাবি করেন, নাগেশ্বরী ও বাগরাকোট, দু’টি বাগানই খোলা রয়েছে। নাগেশ্বরীতে দৈনিক ১৫ হাজার কেজি চা তৈরি হচ্ছে। এমনকী গুদামে প্রায় ৩৫ হাজার কেজি চা তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। বাগানে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করছেন।

অন্য দিকে, বাগরাকোটের বাগানে কারখানা বন্ধ থাকলেও চা পাতা তোলার কাজ চলছে। সেই পাতার যতটা সম্ভব নাগেশ্বরী বাগানে যাচ্ছে চা তৈরির জন্য। বাকিটা বিক্রি করা হচ্ছে। গৌরীপ্রসাদের দাবি, কারখানা চালু রাখলে বরং বাগানের আর্থিক অবস্থার উপর চাপ পড়ত। বাগানেই যেহেতু অধিকাংশ শ্রমিক কাজ করেন, তাই চা পাতা তোলার কাজ চালু রেখে কারখানা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেই কারখানা চালু করা সম্ভব। তবে তাঁর দাবি, এমনিতেই সার্বিক ভাবে চা শিল্পের মরসুম শেষের দিকে। ফলে চা পাতা তোলার কাজও কমে আসছে।

বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ও পিএফ নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে দাবি করেও তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম মতো মজুরির সঙ্গে সঙ্গেই পিএফের টাকাও জমা পড়ে।’’ অনাহারে বাগানের শ্রমিকদের মৃত্যু প্রসঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হলেও তার দায় বাগানের উপরই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

গত বছরের চেয়ে নিলামে এ বছর তাঁদের বাগানগুলির চা কম যাচ্ছে, এই অভিযোগ অবশ্য মানছেন গৌরীপ্রসাদ। তবে তিনি জানান, নিলামে কম চা পাঠানোর অর্থ এই নয় যে, কম চা তৈরি হচ্ছে। নিলামে চা পাঠালে তা বিক্রির পরে সেই টাকা হাতে পেতে পাঁচ-ছয় সপ্তাহ লেগে যায়। তাই বাগানে দ্রুত নগদ জোগান বজায় রাখতেই তাঁরা সরাসরি বাজারে চা বিক্রি করছেন। উল্লেখ্য, ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া বছরে ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজ-এর ক্ষতির অঙ্ক ছিল প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এ বছরের এপ্রিল-জুনের ত্রৈমাসিকে সংস্থার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২০ কোটি টাকারও বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE