Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
জলতীর্থে দুর্নীতি

মানসের চিঠি পেয়ে কমিটি সবংয়ে

সরকারি প্রকল্পে পুকুর কাটতে সাধারণ দরের থেকে বহু গুণ বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে বলে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:২৩
Share: Save:

সরকারি প্রকল্পে পুকুর কাটতে সাধারণ দরের থেকে বহু গুণ বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে বলে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নজর না দিয়ে ‘জলতীর্থ’ প্রকল্পে জলাশয় খননে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন সবংয়ের বিধায়ক মানসবাবু। পরিসংখ্যান দিয়ে বিধানসভায় তার জবাব দিলেন মন্ত্রী সৌমেনবাবু। জলসম্পদ মন্ত্রী তাঁর জবাবে জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকে পুকুর-জলাশয় সংস্কার এবং খননে মোট ১৭৪.৮৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবং ব্লকের দশগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি জলাশয়-পুকুর খনন ও সংস্কারের জন্য যথাক্রমে ৪৪.৭৪ লক্ষ টাকা, ৩৪.০৬ লক্ষ টাকা এবং ২৮.৯৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আর সবং ব্লকেরই কেরুর উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি জলাশয় খননের জন্য ৬৭.১৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আর পিংলা ব্লকের জন্য এই খাতে এখনও পর্যন্ত কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। দশগ্রাম ও কেরুরে জলাশয় খননের কাজ খতিয়ে দেখার জন্য জলসম্পদ দফতরের তরফে সম্প্রতি একটি কমিটিও গড়া হয়েছে। দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে থাকছেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক মানসবাবু, এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের অমূল্য মাইতি, সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক-সহ মোট ১২ জন। সরকারের এই পদক্ষেপ কার্যত তাঁর অভিযোগ মেনে নেওয়া বলেই দাবি করেছেন মানসবাবু। তাঁর বক্তব্য, “আমি চিঠি দেওয়ায় মন্ত্রী কিছু তথ্য দিয়েছেন। সবংয়ের জন্য একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছেন।” একই সঙ্গে মানসবাবুর যুক্তি, শুধু সবং নয়, জলতীর্থ প্রকল্পে রাজ্য জুড়েই কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। তাহলে সেখানকার পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হোক। জলসম্পদ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জলসম্পদ দফতরের অধীনে ‘জলতীর্থ’ প্রকল্পে পুকুর কাটার নামে এখন বিপুল টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। সম্প্রতি নিজের জেলায় গিয়ে বিধায়ক মানসবাবুর নজরে আসে, সবং ও পিংলা ব্লকে পুকুর কাটার জন্য ঠিকাদার দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে এবং ব্যবহার করা হচ্ছে জেসিবি মেশিন। অথচ মেদিনীপুরের ওই অঞ্চলে মাটি এমন কিছু শক্ত নয়, যার জন্য মেশিন ব্যবহার করতে হবে! খোঁজ নিয়ে তিনি জানেন পুকুরগুলি কাটতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম খরচে পুকুর কাটা সম্ভব। এরপরই জলসম্পদ মন্ত্রী ও দফতরের সচিবকে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ জানান সবংয়ের বিধায়ক। টাকা নয়ছয় বন্ধে মন্ত্রীকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি। জলসম্পদ দফতর সূত্রের খবর, গোটা রাজ্যেই এই প্রকল্প চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ঘাটাল মহকুমায় ৪৩টি, ঝাড়গ্রামে ১৭ এবং খড়গপুরে ১১টি প্রকল্পের কাজের জন্য মোট বরাদ্দ করা হয়েছে ৬১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE