Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্যপাল নন, উপাচার্যের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে রাজ্য, মন্তব্য পার্থের

আইন অনুযায়ী কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলু তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আচার্য রাজ্যপালের কাছে। কারণ আচার্যই তাঁর নিয়োগ-কর্তা। রাজ্যপাল পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করায় হাংলু নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ২২:০৯
Share: Save:

আইন অনুযায়ী কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলু তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আচার্য রাজ্যপালের কাছে। কারণ আচার্যই তাঁর নিয়োগ-কর্তা। রাজ্যপাল পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করায় হাংলু নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শনিবার জানিয়ে দিলেন, রাজ্যপাল নন, হাংলু কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে থাকবেন কি না তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার।

পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘ছাত্রদের ভর্তি ‘ফি’ না কমালে হাংলু হোক আর যে-ই হোক, তাঁকে রাখব না।’’ গত বুধবার রাত থেকে ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলুকে ঘেরাও করে রাখে পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি আচার্য রাজ্যপালকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। রাজ্যপাল সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেওয়ার পরেও শিক্ষামন্ত্রী কী ভাবে এমন কথা বলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মন্তব্য, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি কত হবে তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি। রাজ্য সরকারের এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার এক্তিয়ারই নেই। আর নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সরকার কোনও ভাবেই কোনও উপাচার্যকে নিয়োগ করতে পারে না কিংবা তাঁকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করতে পারে না। উপাচার্য নিজে থেকে পদত্যাগ করলে অবশ্য অন্য কথা। সে ক্ষেত্রে তিনি আচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নয়। যেমন হাংলু করেছেন।’’ শিক্ষামন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ওই শিক্ষক।

বাম জমানায় শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বার বার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন তারা নিজেরাই সেই পথে হাঁটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বছর ছাত্র বিক্ষোভ ঠেকাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক হাতে নিয়ে বিধি ভেঙে উপাচার্যের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মাসে শিক্ষক সংগঠন অ্যাবুটার এক সভায় গিয়ে মমতার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘স্বাধিকারের নামে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হচ্ছে।’’ পার্থবাবুর এ দিনের বক্তব্য নিয়ে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক জন উপাচার্যকে রাখা বা সরানোর দায়িত্ব বা ক্ষমতা কোনওটাই সরকারের নেই।’’ তাঁর মতে, ‘‘এর থেকেও বড় কথা, এক জন উপাচার্যকে ন্যূনতম যে সম্মান জানাতে হয় শিক্ষামন্ত্রী সেটাও জানেন না। উপাচার্যকে যে ভাবে ‘হাংলু হোক আর যেই হোক’ বলে সম্বোধন করেছেন তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE