যখন বিরোধী শিবিরে ছিলেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে ‘রামধনু জোট’ গড়ার অভিযোগ তুলত তৎকালীন শাসক দল। এ বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বিরোধীদের দিকে সেই রামধনু জোটের তোপ ফিরিয়ে দিলেন! বিরোধীরা অবশ্য আবার পুরবোর্ড গঠনের চলতি প্রক্রিয়ায় তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে রামধনু জোট করার পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন। অতীতে নানা ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে তিনি ভুল করেছিলেন বলে যে দিন মন্তব্য করলেন মমতা, সেই দিনই বিধানসভা চত্বর সরগরম হয়ে উঠল রামধনু-বিতর্কে!
বিধানসভা অধিবেশনের জিরো আওয়ারে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বিধায়ক মানস ভুঁইয়া মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন পুলিশের ভূমিকা বিপন্ন হওয়া নিয়ে। তার জবাব দিতে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন খড়গপুরের প্রসঙ্গে মানসবাবুকে পাল্টা আক্রমণ করেন। খড়গপুরের এক বিজেপি কাউন্সিলর সুনীতা গুপ্তের স্বামীর উপরে দুষ্কৃতী হামলার প্রতিবাদে এ দিন রেল-শহরে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছিল বাম-কংগ্রেস-বিজেপি। সেই ঘটনার দিকেই ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি রোজ বন্ধ করছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আপনার কংগ্রেসও তাতে সায় দিচ্ছে! সব রামধনু জোট হচ্ছে!’’ এই ধরনের রামধনু জোট তিনি মানবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা যখন এই মন্তব্য করছেন, বাম বিধায়কেরা তখন ওয়াকআউট করে সভার বাইরে। কংগ্রেস বিধায়কেরা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হন। মানসবাবু জানান, খড়গপুরে কোনও রামধনু জোট হয়নি। আর এক কংগ্রেস বিধায়ক আবু তাহের মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান পুরসভার উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে তৃণমূলই তো বিজেপি ও বাম কাউন্সিলর ভাঙিয়ে বোর্ড গড়েছে। বিরোধী ও শাসক পক্ষের বিধায়কদের প্রবল হইচইয়ে তখন এক বার বক্তব্য থামিয়ে নিজের আসনে বসে পড়তেও দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। পরে মানসবাবু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘১৯৯৮ সালে জোট করে এ রাজ্যে বিজেপি-কে কারা পায়ের তলায় জমি এনে দিয়েছিল?’’
বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করার জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা এক সময় মাওবাদী-সহ নানা রঙের শক্তির সঙ্গে জোট করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল সিপিএমের। আজ সেই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। ঘনঘন মমতার জোটসঙ্গী বদলকেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy