হাসপাতালে জয়দেব বসু। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র
জমির খাজনা নিয়ে বিবাদের জেরে ভূমি সংস্কার দফতরের এক কর্মীকে অফিসের মধ্যেই বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার সবংয়ের দণ্ডরা পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় ফের কাঠগড়ায় শাসক দল। অভিযোগ, তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আজাদ আলি খানের ইন্ধনে দলের কিছু কর্মী-সমর্থক জয়দেব বসু নামে ওই ভূমি সহায়ককে মারধর করে। জখম জয়দেববাবুকে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মুখে ও মাথায় চোট রয়েছে।
সবংয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আঙুল উঠলেই সরব হতে দেখা যায় স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াকে। তা সে সবং কলেজে ছাত্র পরিষদ কর্মী খুন হোক বা এলাকার পঞ্চায়েত নিয়ে সমস্যা। তবে আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী-সহ রাজ্য কংগ্রেসের বেশিরভাগ নেতা যেখানে তৃণমূলকে ঠেকাতে বামেদের হাত ধরার পক্ষপাতী, সেখানে মানসবাবু তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছিলেন বলে কংগ্রেসের অন্দরে অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন তাঁর খাসতালুকে তৃণমূল এমন কাণ্ড ঘটানোর পরে মানসবাবুর চুপ থাকা কি সেই অভিযোগকেই জোরালো করে না?
মানসবাবুর জবাব, ‘‘সরকারি কর্মীকে তৃণমূলের গুন্ডারা যে ভাবে মেরেছে তা নিন্দনীয়। প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয় সে দিকে নজর রাখছি।’’ আর জোট প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কথা বলিনি। বারবার একলা চলার কথা বলেছি। আর ২০১১ সালে সিপিএমকে হঠাতে বাধ্য হয়ে তৃণমূলের হাত ধরতে হয়েছিল। সেটাও দলের নির্দেশে।’’
তৃণমূল আমলে বারবার সরকারি কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় শাসক দলের নাম জড়িয়েছে। কখনও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের চেক বিলি করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন সরকারি কর্মী, কখনও বালি পাচার আটকাতে
গিয়ে মার খেয়েছেন সরকারি আধিকারিক। এ বার ঘটনাস্থল সবং।
কী ঘটেছিল এ দিন? সবংয়ের দণ্ডরা গ্রাম পঞ্চায়েতের রেভেনিউ ইনস্পেক্টরের অফিসে এ দিন বেলা বারোটা খাজনা জমা নেওয়ার কাজ করছিলেন ভূমি সহায়ক জয়দেববাবু। অভিযোগ, সেই সময় জমির নথিপত্র ছাড়া খাজনা দিতে চান দণ্ডরা গ্রামের কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। জয়দেববাবু তাঁদের জমির দলিল ও খাজনার নথি আনতে বললে বচসা বাধে। তৃণমূল কর্মীদের পক্ষ নেন দলের পঞ্চায়েত সদস্য আজাদ আলি। তিনি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিও। আজাদের সামনেই জয়দেববাবুকে মারা হয় বলে অভিযোগ।
এ দিন সন্ধ্যায় আজাদ-সহ তৃণমূলের ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত ভূমি সহায়ক। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি। জেলার এসপি ভারতী ঘোষ জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজাদের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, “জয়দেববাবু অতিরিক্ত সাতশো টাকা চেয়েছিলেন। প্রতিবাদ করলে উনিই আমাকে মারধর করেন।” অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন জয়দেববাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy