Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পত্তি বেচে টাকা ফেরত দেব, আদালতে আর্জি র‌্যামেল-কর্তার

শ্যামল সেন কমিশনে গিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভাবেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা ‘র্যামেল’-এর অন্যতম কর্তা সুকান্ত দেব। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর আদালতে তাঁকে হাজির করানোকে ঘিরেও হয়ে গেল একপ্রস্ত নাটক। এই সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হওয়া স্থানীয় এক আমানতকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে সুকান্তকে এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল।

বিষ্ণুপুর আদালত চত্বরে প্রিজন ভ্যানে র‌্যামেল-কর্তা। ছবি: শুভ্র মিত্র।

বিষ্ণুপুর আদালত চত্বরে প্রিজন ভ্যানে র‌্যামেল-কর্তা। ছবি: শুভ্র মিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৪:৩১
Share: Save:

শ্যামল সেন কমিশনে গিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভাবেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা ‘র‌্যামেল’-এর অন্যতম কর্তা সুকান্ত দেব। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর আদালতে তাঁকে হাজির করানোকে ঘিরেও হয়ে গেল একপ্রস্ত নাটক।

এই সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হওয়া স্থানীয় এক আমানতকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে সুকান্তকে এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। অভিযোগকারী নিজে অবশ্য এ দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে ওই লগ্নিসংস্থার বহু আমানতকারী ও এজেন্ট সুকান্তর হাজিরার খবর পেয়ে ভিড় করেছিলেন কোর্ট চত্বরে, শুনানি পর্ব নিজের চোখে দেখতে। বিচারকের এজলাসের দরজার সামনে ঠাসা ভিড় ছিল। হঠাৎই সুকান্ত বিচারপতির উদ্দেশে বলে ওঠেন, “সেবি আমাকে সম্পত্তি বিক্রি করতে দিচ্ছে না! যে ভাবেই হোক টাকা জোগাড় করে আমানতকারীদের আমি ফিরিয়ে দেব।”

যা শুনে বিচারকের মন্তব্য , “সৎ উদ্দেশ্য থাকলে আপনি নিজেই ধরা দিতেন। পুলিশকে আর ধরে আনতে হত না!”

এর পরই জামিনের আবেদন করেন সুকান্ত। তিনি দাবি করেন, তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জামিন দিলেই যতটা সম্ভব টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। জামিন অবশ্য পাননি এই লগ্নিসংস্থা কর্তা। তাঁকে চার দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠান বিচারক। র‌্যামেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডিরেক্টর (ফিনান্স) সুকান্তর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছিল অনেক আগে থেকেই। তাই গত সোমবার বিকেলে নিজেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পরিচয় দিয়ে সারদা কমিশনের এজলাসে ঢুকেছিলেন তিনি। এক দল আমানতকারী কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেনকে জানান,

ওই ব্যক্তিই সংস্থার ফিনান্স ডিরেক্টর। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

এ দিন শুনানি শেষে এজলাস থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার আগে সুকান্তকে দেখে ‘মিথ্যেবাদী’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন আমানতকারীরা। সামনে সাংবাদিকদের দেখতে পেয়ে সুকান্ত দাবি করেন, “আমি ছদ্মবেশে শ্যামল সেন কমিশনে যাইনি। এটা মিথ্যা প্রচার।” একই সঙ্গে বলেন, “আমানতকারীদের টাকা সম্পত্তি বেচে ফিরিয়ে দিতে চাই। শ্যামল সেন কমিশন আমাকে সহযোগিতাই করছে না।”

তড়িঘড়ি পুলিশ প্রিজন ভ্যানের দরজা বন্ধ করতে গেলে ফের তিনি দরজার সামনে এসে চিৎকার করে বলতে থাকেন, “আমি টাকা ফেরত দিতে চাই। কিন্তু আমাকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।”

সুকান্তর আইনজীবী অতনু দে বলেন, “আমার মক্কেল জামিন পেলে সম্পত্তি বেচে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ দিন জামিন হয়নি। ২২ তারিখ তাঁকে ফের কোর্টে তোলা হবে। ওই দিন আবার জামিনের আবেদন জানানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE