দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী ও তাঁর শিশুকন্যাকে খুনের মামলায় শুনানির তৃতীয় দিন, বৃহস্পতিবার সুরতহাল রিপোর্টে নিজের সই চিহ্নিত করলেন ভুটভুটির মাঝি মুকুন্দ মান্না। সরকারি কৌসুলী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে মাঝি জানান, মেরুন রঙের ব্যাগ থেকে (যে ব্যাগ সমরেশ ভুটভুটি থেকে গঙ্গায় ফেলেছিলেন বলে বুধবারই আদালতে জানিয়েছিলেন মাঝি) উদ্ধার হওয়া মহিলার দেহের নিম্নাংশের সুরতহাল তাঁর উপস্থিতিতেই করা হয়। তিনি তাতে সইও করেন। তারপরেই এ দিন সরকারি আইনজীবী জানান, মাঝিকে তাঁর আর কোনও প্রশ্ন করার নেই।
এর পরেই শ্রীরামপুর আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক) রাজা চট্টোপাধ্যায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ধূর্জটিনারায়ণ পাকড়াশির কাছে জানতে চান, তিনি সাক্ষীকে প্রশ্ন করবেন কি না। আসামী পক্ষের আইনজীবী প্রথম দু’দিনেরর মতোই এ দিনও জানিয়ে দেন, চার্জগঠনের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে আসামীর পক্ষে ‘রিভিশন পিটিশন’ দায়ের করা হয়েছে। ওই পিটিশনের নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। তা ছাড়া, ওই আদালতের আইনজীবীর কাছে সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র আছে। ফলে তাঁরা প্রশ্ন করার জন্য যথেষ্ট তৈরি নন। এ ব্যাপারে লিখিত আবেদনও জানান ধূর্জটিনারায়ণবাবু। আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, যে কারণ আসামী পক্ষের আইনজীবী দেখাচ্ছেন তার পিছনে যথেষ্ট যুক্তি নেই। সাক্ষীকে জেরা করতে হবে জেনেও কেন গত তিন দিনে আসামী পক্ষের আইনজীবী তৈরি হননি সেই প্রশ্নও তোলেন জয়দীপবাবু। তিনিও মামলার দ্রুত অগ্রগতি দাবি করে আদালতে লিখিত আবেদন জমা দেন। বিচারকের কাছে আর্জি জানান, মামলা দ্রুত শেষ করতে আদালত যেন দিক নির্দেশ করে। এ ভাবে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে গেলে পরের সাক্ষীকে তলব করা যাবে না। জয়দীপবাবু পরে জানান, বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি সাক্ষীকে (মাঝিকে) আসামি পক্ষের আইনজীবীর জেরার দিন ধার্য করা হচ্ছে। ওই দিন তাঁরা জেরা না করলে আদালত আইন মোতাবেক পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
গত বছর অগস্ট মাসের শেষ দিকে প্রেমিকা সুচেতা চক্রবর্তী এবং তাঁর চার বছরের মেয়ে দীপাঞ্জনাকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ওঠে দুর্গাপুরের ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সমরেশ সরকারের বিরুদ্ধে। খুনের পরে সুচেতার দেহ তিন টুকরো করে ব্যাগে ভরে এবং অন্য একটি ব্যাগে দীপাঞ্জনার দেহ ভরে ব্যারাকপুর থেকে শেওাফুলির মাঝে গঙ্গায় যাত্রীবোঝাই ভুটভুটি থেকে তিনি ফেলে দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। সেই মামলারই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে শ্রীরামপুর আদালতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy