সারদা-কাণ্ডের ছায়ায় রাজ্যে আজ, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় পর্বের লোকসভা ভোট। এই পর্বে চার জেলার যে ৬টি কেন্দ্রে ভোট, তার মধ্যে পাঁচটিতেই এখন কংগ্রেসের সাংসদ। সেই অর্থে আজকের ভোট কংগ্রেসের দুর্গরক্ষার লড়াই।
দ্বিতীয় পর্বে আজ ভোটে যাচ্ছে রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, উত্তর ও দক্ষিণ মালদহ, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ। সেই সুবাদে কংগ্রেসের পাঁচ সাংসদ দীপা দাশমুন্সি, মৌসম বেনজির নূর, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও মান্নান হোসেনের ভাগ্য-পরীক্ষা হবে আজই। এই সব কেন্দ্রেই তৃণমূল চ্যালেঞ্জারের ভূমিকায়। রাজ্যের শাসক দলের হয়ে ময়দানে আছেন এক দিকে যেমন নাট্য-ব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ, গায়ক সৌমিত্র রায়, চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন, তেমনই আবার আছেন নুরুল ইসলাম, মহম্মদ আলির মতো পুরোদস্তুর ‘রাজনৈতিক’ প্রার্থীরা।
যে কেন্দ্রগুলিতে ভোট। সবিস্তার...
এই পর্যায়ে ভোটে-যাওয়া আসনগুলির মধ্যে একমাত্র বালুরঘাটই এখন রয়েছে বামেদের হাতে। পঞ্চায়েতে অবশ্য উত্তর দিনাজপুর ও মালদহের কিছু অংশে ভাল ফল করেছিল বামেরা। আপাতত তাদের লক্ষ্য, সারদা-কাণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়ার হাওয়ায় এবং পঞ্চায়েতের ‘ইতিবাচক’ ফলের উপরে ভরসা করে কিছু আসন ছিনিয়ে নেওয়া। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বরাবরই বিজেপি-র কিছু ভোট আছে। এ বার মোদী-হাওয়ায় তাদের ভোট কত হয়, তারও পরীক্ষা হবে আজ।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বারেবারেই বলছেন, “এখন আমাদের লক্ষ্য তিনটে। প্রথমত, নিজেদের বর্তমান আসন ধরে রাখা। দ্বিতীয়ত, আসন বাড়ানো। এবং তৃতীয়ত, বাংলায় কংগ্রেসের ভোটের হার বাড়িয়ে নেওয়া।” কংগ্রেসের হাতে-থাকা বর্তমান আসনগুলির মধ্যে একমাত্র অধীরের বহরমপুর কেন্দ্রের ভোটই বাকি থাকছে। বাকি পাঁচটির জন্যই ভোট-গ্রহণ আজ। আবার তৃণমূলের লড়াই সারদা-কাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের প্রচারের মোকাবিলা করে কংগ্রেস-দুর্গে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করার। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, “প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় দফাতেও মানুষ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে রাজ্যের উন্নয়নকে সমর্থন করবেন। রাজ্যের উন্নয়ন-কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁরা সাহায্য করবেন বলেই আশা করি।”
ভোট-পর্ব চলাকালীন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনও যে ভাবে নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন এবং কংগ্রেস-সিপিএম-সহ সব বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলার অভিযোগ এনেছেন, তাতে ‘বিপজ্জনক’ সঙ্কেতই দেখছে বামেরা। তবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের আহ্বান, “নানা রকম অপচেষ্টা চলবে। কিন্তু মানুষকে বলছি, কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বুথে যান। ভোট দিতে বাধা পেলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানান। কমিশন ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।”
সরকারি সূত্রের খবর, ৬টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় চার হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, প্রতিটি উত্তেজনা-প্রবণ বুথে এবং সেক্টর অফিসে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এই পর্বে কমিশন ১৮৯টি বুথে ওয়েবক্যাম ব্যবস্থা রাখছে। থাকছে ৭টি মোবাইল ক্যামেরা-যুক্ত গাড়ি। গাড়িগুলি স্পর্শকাতর এলাকায় টহল দেবে। সেখানে থেকে সরাসরি ছবি চলে আসবে কলকাতায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরে। প্রয়োজনে সেখান থেকেই বিশেষ পর্যবেক্ষক বা সিইও সরাসরি নির্দেশ দেবেন জেলায়। এ ছাড়াও ত্রিস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy