Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হাওড়ায় বিজেপির সভায় বোমা, সংঘর্ষ বর্ধমান-বীরভূমেও

হাওড়ায় সালকিয়া বাঁধাঘাটে রবিবার বোমা পড়ল বিজেপির সভায়। তারই জেরে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জখম হলেন ৪ জন। বীরভূমের সদাইপুর ও বর্ধমানের মঙ্গলকোটেও এ দিন এই দু’টি দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সদাইপুরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। সেখানে কেউ হতাহত হননি। মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে সভা ফেরত এক দল তৃণমূল সমর্থকের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বিজেপি সমর্থকদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০১
Share: Save:

হাওড়ায় সালকিয়া বাঁধাঘাটে রবিবার বোমা পড়ল বিজেপির সভায়। তারই জেরে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জখম হলেন ৪ জন। বীরভূমের সদাইপুর ও বর্ধমানের মঙ্গলকোটেও এ দিন এই দু’টি দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, সদাইপুরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। সেখানে কেউ হতাহত হননি। মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে সভা ফেরত এক দল তৃণমূল সমর্থকের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বিজেপি সমর্থকদের। তাতে বিজেপির ৭ জন ও তৃণমূলের ২ জন সমর্থক আহত হন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁদের।

কী ঘটেছে হাওড়ায়? কলকাতায় সভা করবেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তারই প্রচারের জন্য সালকিয়া বাঁধাঘাটে রবিবার বিকেলে সভা করছিলেন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। সভা চলার মাঝেই শুরু হয় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাফ নামাতে হয়। দু’পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেও রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আহত ৪ জন হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভতি।

এই সভা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছিল আগে থেকেই। বিজেপির অভিযোগ, শনিবার মঞ্চে লাইট-মাইক লাগানোর কাজে নিযুক্ত কর্মীকে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করেন। এ নিয়ে মালিপাঁচঘড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিজেপি নেতারা। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বিকেলে সভা শুরু হতেই শ’পাঁচেক তৃণমূল সমর্থক সভাস্থল থেকে প্রায় ২৫ গজ দূরে বিজেপি-বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। বিজেপির অভিযোগ, স্লোগান দেওয়ার মাঝেই তৃণমূল সমর্থকরা বিজেপির সভায় বোতল বোমা ছোড়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, বোমা পড়তেই দু’পক্ষের গোলমাল শুরু হয়। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ ও র্যাফ লাঠিচার্জ শুরু করে। ভিড় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় তাতে। ওই এলাকা ফাঁকা হয়ে গেলেও ফের দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয় গোলাবাড়ি থানার সামনে ।

বোমার আঘাতে শিবু প্রসাদ ও কার্তিকচন্দ্র সাউ নামে দু’জন জখম হয়েছেন। দু’জনের পায়েই ১৪টি করে সেলাই পড়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি সমর্থকদের হামলায় ভানু সিংহ ও অরুণ বেরা নামে তাঁদের দুই সমর্থক আহত হয়েছেন। অরুণের মাথায় চোট লেগেছে। দুই দলের সমর্থকদের একই হাসপাতালে ভর্তি করানোর ফলে দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরা সেখানে এসে জড়ো হন। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বরের পরিস্থিতিও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাসপাতাল চত্বরেও পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করতে হয়।

উত্তর হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রাইয়ের অভিযোগ, “তৃণমূল ইচ্ছাকৃত ভাবে হামলা চালিয়েছে।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তর হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি গৌতম চৌধুরী বলেন, “বিজেপিই গোলমাল পাকানোর জন্য হামলা চালিয়েছে। নিজেরাই নিজেদের সভায় বোমা মেরেছে।”

সদাইপুরের ঘটনার পিছনে দলবদলের যোগ পেয়েছে পুলিশ। ওখানে পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, এর বদলা নিতেই ওই পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে লুঠপাট ও আগুন লাগানো হয়েছে। এর পিছনে বীরভূমের নিহত তৃণমূল নেতা আবুল কালামের দাদা ও অনুগামীরা জড়িত। অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তৃণমূলের দুবরাজপুর ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রের অবশ্য বক্তব্য, “আবুল কালামের খুনে অভিযুক্ত এক জনকে এ দিন এলাকায় দেখা গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে তাড়া করায় নিজেরাই বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE