Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কেন চোরাপথে উত্তর কোরিয়ার যুবক এ দেশে

উত্তর কোরিয়ারই ‘নাম নাম কোঅপারেশন’ নামে একটি কম্পি‌উটার সংস্থার বাংলাদেশ শাখায় কাজ নিয়ে ২০১৫ সালে ঢাকায় যান জিয়াং। ভিসার মেয়াদ ছিল এ বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত। চোরাপথে ঢুকেছিলেন এ দেশে। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। বুধবার গ্রেফতার করা হয় বছর তিরিশের ওই যুবককে।

জিয়াং হু

জিয়াং হু

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৫
Share: Save:

স্বরূপনগর সীমান্তে ঘোরাফেরা করছিলেন ভিনদেশি যুবক। চেহারা, পোশাক-আশাক দেখে সন্দেহ হওয়ায় বিএসএফের কর্তব্যরত জওয়ানেরা আটক করেন তাঁকে। নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম জিয়াং হু। উত্তর কোরিয়ারই ‘নাম নাম কোঅপারেশন’ নামে একটি কম্পি‌উটার সংস্থার বাংলাদেশ শাখায় কাজ নিয়ে ২০১৫ সালে ঢাকায় যান জিয়াং। ভিসার মেয়াদ ছিল এ বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত। চোরাপথে ঢুকেছিলেন এ দেশে। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। বুধবার গ্রেফতার করা হয় বছর তিরিশের ওই যুবককে।

বাংলাদেশে কয়েক বছর থাকার সুবাদে ভাঙা ভাঙা বাংলা শিখেছেন জিয়াং। কয়েকটা হিন্দি শব্দও বলছেন। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় ওই যুবক দাবি করেছেন, উত্তর কোরিয়ার সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টে তাঁর বাড়ি। ঢাকায় বেতন পেতেন বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ হাজার টাকা। ঢাকার অফিসটি আপাতত বন্ধ। তার সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন জিয়াং।

পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের এক দালাল তাঁর সঙ্গে ভাব জমিয়ে বুঝিয়েছিল, ভারতে অনেক বেড়ানোর জায়গা আছে। দেশ দেখতেই দালালকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে তিন দিনের ছুটিতে এ দেশে আসেন জিয়াং। সোনাই নদী পেরিয়ে সাতক্ষিরা হয়ে বিথারিতে ঢোকেন। কিন্তু তাঁকে ফেলে পালায় দালাল।

বাংলাদেশের ভিসা, কোরিয়ার পাসপোর্ট মিলেছে জিয়াংয়ের কাছ থেকে। তবে কেন তিনি চোরাপথে এ দেশে ঢুকতে গেলেন, তা স্পষ্ট নয়। একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার হয়েছে জিয়াংয়ের কাছ থেকে। সেটি খুলতে পারেনি পুলিশ। ধৃত যুবকের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রূপান্তর সেনগুপ্ত।

আপাতত জিয়াংয়ের ঠাঁই হয়েছে বসিরহাট সংশোধনাগারে। ভাষার কিছু সমস্যা থাকায় তাঁকে ভাল করে জেরা করা সম্ভব হয়নি বলে জানাচ্ছে বসিরহাট পুলিশ। ১৪ দিন জেলহাজতের মেয়াদ শেষে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে তাঁকে আরও খুঁটিনাটি জেরার জন্য দমদম সেন্ট্রাল জেলে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এর আগে এক চিনা নাগরিক ধরা পড়েছিল বসিরহাট সীমান্তে। পরে জানা যায়, চিনের একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের মাথা সে। উত্তর কোরিয়ার যুবকের অনুপ্রবেশকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

জিয়াংয়ের হয়ে তাঁর দেশের কেউ এখনও দেখা করতে । তবে জেলা পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে। বসিরহাট জেলে অবশ্য বহাল তবিয়তেই আছেন জিয়াং। অন্য বন্দিদের সঙ্গে চুটিয়ে ভলিবল খেলছেন। ভাঙা ভাঙা বাংলা-হিন্দিতে অনেকের সঙ্গে ভাবও জমিয়ে ফেলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE