Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভর্তি দুর্নীতিতে জাল মার্কশিট, ধৃত ৫

কলেজে কলেজে টাকার বিনিময়ে ভর্তির অভিযোগ উঠেছে অনেক দিন ধরেই। কয়েক সপ্তাহ আগে শ্যামবাজার এলাকায় এক ছাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিতে গিয়ে ধরা পড়েন এক যুবক। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তির জন্য লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৫
Share: Save:

সেন্ট জেভিয়ার্স, ক্ষুদিরাম কলেজের পর ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি। কলেজে ভর্তিতে জালিয়াতির দায়ে এ বার গ্রেফতার পাঁচ যুবক। লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে তাঁরা জাল মার্কশিট তৈরি করে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিতেন বলে অভিযোগ।

ধৃতদের বিরুদ্ধে ভবানীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যতীন সুরানা নামে এক যুবক। ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজে ভর্তি করানোর জন্য তাঁর থেকে লক্ষাধিক টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার বিকেলে ভবানীপুর থেকে তিন জন এবং রাতে হাওড়ার গোলাবাড়ি থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, মূল অভিযুক্ত সইফ আলি খান, অতুল গুপ্ত এবং সৌরভ সোনকার আশুতোষ কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। অন্যরা হলেন অজয় সিংহ ও অবনীশ মাদুগেরিয়া। শনিবার তাঁদের আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, বিচারক সৌগত রায়চৌধুরী ধৃতদের ৩ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

তদন্তকারীদের দাবি, আইএসসি পরীক্ষায় ৮০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছেন, এমন প্রার্থীকে খুঁজে বের করতেন ওই পাঁচ জন। তার পরে সইফ অনলাইনে ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজের ফর্ম পূরণ করতেন। প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের থেকে অনেক বেশি নম্বর সেখানে দেওয়া হতো। কাউন্সেলিং এর সময়ে প্রার্থীর নকল মার্কশিট তৈরি করতেন তাঁরা। এর জন্য লক্ষাধিক টাকা নেওয়া হতো বলে অভিযোগ। বেশি নম্বর থাকায় কাউন্সেলিংয়ে অনায়াসে পাশ করে যেতেন প্রার্থীরা।

কলেজে কলেজে টাকার বিনিময়ে ভর্তির অভিযোগ উঠেছে অনেক দিন ধরেই। কয়েক সপ্তাহ আগে শ্যামবাজার এলাকায় এক ছাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিতে গিয়ে ধরা পড়েন এক যুবক। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তির জন্য লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে। ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটির পাশাপাশি অন্য কলেজেও এই চক্র সক্রিয় কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর জাল মার্কশিট।

কয়েক সপ্তাহ আগেই তৃণমূল ভবনে এক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আশুতোষ কলেজের টিএমসিপি কর্মীদের থেকে জানতে চেয়েছিলেন ওই কলেজ ঘিরে ভর্তির এত অভিযোগ উঠছে কেন? তার জেরে ওই কলেজের এক প্রাক্তনীর কলেজের আশেপাশে ঘোরাফেরা নিষিদ্ধ হয়েছে। তার পরেও ফের ওই কলেজের নাম সামনে এল।

হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, গোলাবাড়ির থানা এলাকার অবনী দত্ত রোড ও সনাতন মিস্ত্রি লেনে থাকেন অবনীশ মাদুগেরিয়া ও অজয় সিংহ। অবনীশের মা সরোজ মাদুগেড়িয়া জানান, শুক্রবার রাতে ছেলেকে পুলিশ কেন ধরে নিয়ে গিয়েছে তিনি জানেন না। পেশায় ব্যবসায়ী ওই দুই যুবক যে জাল মার্কশিট চক্রের সঙ্গে জড়িত তা জেনে অবাক এলাকার লোকও। স্থানীয় বাসিন্দা সুজন অগ্রবাল বলেন, ‘‘ইদানীং দু’জনে একসঙ্গে ব্যবসা করছিল। ভিতরে ভিতরে এ সব কাজ করত তা বোঝা যায়নি।’’

তাহলে কি ভুয়ো মার্কশিট নিয়ে অনেকেই ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন? কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। পুলিশ জানিয়েছে, সম্পূর্ণ মেধাতালিকা খতিয়ে দেখছেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে জাল মার্কশিট রয়েছে কিনা তদন্ত করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE