Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল অভিষেকের সম্পত্তি: মুকুল

অভিযোগ খণ্ডনে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। দলের সাধারণ সম্পাদক বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শঠতা, অসততা, দুরভিসন্ধির দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন মুকুল রায়!

আগ্রাসী: সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

আগ্রাসী: সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১২
Share: Save:

তৃণমূল আসলে একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, যার মালিকানা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে—শনিবার এই অভিযোগ করলেন সদ্য বিজেপি-তে যাওয়া একদা তৃণমূলের দু’নম্বর নেতা মুকুল রায়। তাঁর দাবি, তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’ এবং ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর ট্রেডমার্ক অভিষেক নিজের নামে নথিভুক্ত করিয়েছেন। তিনি ঘাসফুল প্রতীকের স্বত্বাধিকার চেয়েও আবেদন করেছেন। মুকুলের আরও দাবি, ‘‘অভিষেকের পক্ষ নিয়ে এক ব্যক্তি আলিপুরদুয়ারে মামলা করেছেন। সেই মামলায় হলফনামা দিয়ে অভিষেকই জানিয়েছেন, ট্রেডমার্ক ও লোগো বিষয়ে তিনি যা করেছেন, সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতি নিয়ে।’’

আরও পড়ুন: প্রমাণ হল আমিই ঠিক, ফের তোপ মুকুলের

অভিযোগ খণ্ডনে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। দলের সাধারণ সম্পাদক বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শঠতা, অসততা, দুরভিসন্ধির দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন মুকুল রায়! ওই লোগোগুলি বিজেপি অন্যায় ভাবে হাইজ্যাক করে নিত। সেটা ঠেকাতে আইন অনুযায়ী আগাম ট্রেডমার্কের মালিকানা করে রাখা হয়েছিল। আর দলের প্রতীক দেয় নির্বাচন কমিশন। যাঁরা রাজনীতি করেন, এটা তাঁদের জানা উচিত।’’

রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করেছেন, ‘‘কাপুরুষরা দেউলিয়া, তৃণমূলের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই করতে অক্ষম। তাই এই ফাঁপা হুমকি।’’ অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসুও এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘মুকুল রায় শুধু অভিষেককে অপমান নয়, আদালতকেও অমান্য করছেন। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’’

এর আগে অভিষেকের বিরুদ্ধে ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো এবং ‘জাগো বাংলা’র ট্রেডমার্ক ‘আত্মসাৎ’ করার অভিযোগ এনেছিলেন মুকুল। এ দিন বিজেপির রাজ্য দফতরে নথি-সহ সেই দাবিই ফের প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন তিনি। এর পরে উলুবেড়িয়ায় জনসভায় তাঁর অভিযোগ, ‘‘কয়লা, বালি, পাথর খাদান, গরু পাচারে বিপুল টাকা লেনদেন হচ্ছে। সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে, সকলেই জানে।’’ যার পাল্টা বৈশ্বানর বলেন, ‘‘কার কাছে, কী ভাবে কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে, কার কোথায় হোটেল-বার আছে, কার কত টাকা বিদেশে কোথায় খাটছে, সে সব খবর আমাদের কাছেও আছে।’’

ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশন দফতরকে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, অভিষেক ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ (ম্যালাফাইড ইনটেনশন) বিশ্ব বাংলার স্বত্ব চেয়ে আবেদন করেছিলেন। মুকুলের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে রাজ্য অভিষেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?’’

উলুবেড়িয়ার সভায় কারও নাম না করে মুকুল বলেন, ‘‘তিনটি মাত্র শিল্প চলছে রাজ্যে। কয়লার চোরাচালান, বালি খাদান আর গরু পাচার।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কয়লা পাচার থেকে মাসে ২২ কোটি টাকা আসছে। কোনও পুলিশ অফিসার যদি বলেন, কয়লার জন্য টাকা নেন না, তা হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’ বালি খাদান থেকে কারা কত টাকা তুলে কলকাতায় কার হাতে জমা দেন, তা-ও সিআইডি-র নতুন এডিজি জানেন বলে দাবি করেন মুকুল। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বসিরহাট, মুর্শিদাবাদ হয়ে যে গরু পাচার হয়, কারা পাচার করে, মাসে ২০ কোটি টাকা কোন হোটেলে, কোন সিটি সেন্টারে জমা পড়ে, আপনি জানেন না?’’ ক্যানিংয়ে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুকুলকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তা থেকে তুলে মন্ত্রী করেছিলেন। সব ভোগ করে এখন লাথি মারছেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE