Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সিঙ্ঘভি ‘বিশ্বাসঘাতক’, রাহুলকে বার্তা অধীরের

হাইকোর্ট থেকে ফিরে প্রদেশ সভাপতি অধীরবাবু এ দিন রাহুল গাঁধীর কাছে বার্তা পাঠিয়ে বিহিত চেয়েছেন।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৯
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টে পঞ্চায়েত মামলায় বাংলার তৃণমূল সরকারের পক্ষে সওয়াল করলেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। আর বাংলার কংগ্রেসের তরফে অধীর চৌধুরী সাফ বলে দিলেন, ‘‘এই রকম সাংসদের জন্য জুতোর মালা অপেক্ষা করছে!’’

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নে জেলায় জেলায় রক্তাক্ত হচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। মুর্শিদাবাদে শুক্রবারই কংগ্রেস কর্মীদের বেধড়ক মার খেতে হয়েছে তৃণমূলের হাতে। কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কলকাতা হাইকোর্টে নিজে সওয়াল করে প্রার্থীদের জন্য পুলিশি নিরাপত্তার অন্তর্বর্তী আদেশ আদায় করেছেন। আর সেই দিনই পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল সরকারের হয়ে দাঁড়িয়েছেন সিঙ্ঘভি। মাত্র ১৫ দিন আগে বাংলা থেকেই কংগ্রেস বিধায়কদের ভোটে যিনি ফের রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন!

হাইকোর্ট থেকে ফিরে প্রদেশ সভাপতি অধীরবাবু এ দিন রাহুল গাঁধীর কাছে বার্তা পাঠিয়ে বিহিত চেয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বাংলার মাঠে-ময়দানে যে তৃণমূলের হাতে কংগ্রেস কর্মীরা আক্রান্ত, কংগ্রেসের সাংসদ হয়ে সেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের পক্ষে সর্বোচ্চ আদালতে সওয়াল দলের কর্মী-সাংসদদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার সামিল! যদিও সিঙ্ঘভির যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি আবেদন করেছে বলেই তিনি তার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন।

এর আগেও সারদা ও নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের হয়ে মামলা লড়ায় কপিল সিব্বল, সিঙ্ঘভিদের বাংলায় বয়কট করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু এখন বাংলা থেকে সাংসদ সিঙ্ঘভির ভূমিকা ক্ষোভের মাত্রা বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কলকাতায় এসে আজ, শনিবারই কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল সিঙ্ঘভির। সাংসদের মতিগতি আন্দাজ করে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান সেই বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে কারণ দেখানো হয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে বিধায়কদের ব্যস্ততা এবং বিরোধী দলনেতার অসুস্থতা। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে মান্নান বলেছেন, ‘বিশ্বাসঘাতকে’র সঙ্গে আবার বৈঠক কীসের!

সিঙ্ঘভি প্রসঙ্গে অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘এই রকম জনপ্রতিনিধিকে ঘৃণা করি! উনি তৃণমূলের কাছে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আমরা বলছি, ওঁর জন্য জুতোর মালা অপেক্ষা করছে!’’ বিধানসভায় কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তীরও মন্তব্য, ‘‘ওঁর দায়বদ্ধতার মুখ চেয়ে বাংলার কংগ্রেস বসে থাকবে না!’’ কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দলীয় তহবিলে সিঙ্ঘভির সাহায্য মেলেনি। উল্টে তিনি রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করছেন!

সিঙ্ঘভি অবশ্য এত ক্ষোভের কারণ দেখছেন না। সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল সেরেই তিনি এ দিন মামলার কাজে গিয়েছিলেন আহমদাবাদ। সেখান থেকেই তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারী বিজেপি। আমি বিজেপির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি। আর আগেও তো তৃণমূলের হয়ে লড়েছি!’’ বস্তুত, এ দিন সিঙ্ঘভির সওয়াল শুনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর কে অগ্রবাল পর্যন্ত প্রশ্ন করেছেন, তিনি কি তৃণমূলে যোগ দেবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE