১৯৯৯ সালের পরে ২০১৪, দীর্ঘ পনেরো বছর পরে ফের বিধানসভায় পা রাখতে চলেছেন কোনও বিজেপি বিধায়ক, বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়ী শমীক ভট্টাচার্য।
লোকসভার সঙ্গে একই সঙ্গে অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। বর্ষীয়ান সিপিএম বিধায়ক ননী করের মৃত্যুতে অশোকনগরে ভোট হয়েছিল সে বার। একে তো প্রবল বাজপেয়ী হাওয়া দেশ জুড়ে, এ রাজ্যে সদ্য তৈরি হওয়া তৃণমূলেরও তখন প্রবল দাপট। সব মিলিয়ে বাম বিরোধী হাওয়ায় অশোকনগর আসনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী বাদল ভট্টাচার্য। বছর দু’য়েকের মধ্যেই অবশ্য এই কেন্দ্রে ভোটে জেতেন সিপিএমের শর্মিষ্ঠা দত্ত।
কিন্তু সে বারই প্রথম এ রাজ্যের বিধানসভায় পা পড়ে কোনও বিজেপি বিধায়কের। শমীকবাবু অবশ্য গত লোকসভা ভোটেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বসিরহাট দক্ষিণে কড়া টক্কর দিতে চলেছেন তিনি। তৃণমূলের ইদ্রিস আলি সাংসদ হলেও বসিরহাট দক্ষিণে লিড ছিল বিজেপির।
লোকসভায় এই ফল অবশ্যই উৎসাহ জুগিয়েছিল বিজেপি শিবিরে। যে কারণে ভোটে হেরে গেলেও এলাকায় যাতায়াত বন্ধ করেননি শমীকবাবু। সেই সঙ্গে শুরু হয় সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা। এই কাজে তিনি পাশে পান দেবব্রত হালদার এবং হাজারিলাল সরকারকে। দেবব্রতবাবুই এ বার এজেন্ট ছিলেন বিজেপি প্রার্থীর। প্রবীন নেতা দেবব্রতবাবু দলের জেলা সভাপতিও বটে। থাকেন হাসনাবাদে। তিনি জানালেন, তৃণমূল শুরু থেকেই গ্রামের দিকে নজর দিয়েছে। বিজেপি ঠিক করে, শহর অঞ্চলেই প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করবে। সেই অঙ্ক মিলেও গিয়েছে ফলাফলে। গ্রামে বিপুল ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও শহরে ক্রমেই পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। হাজারিলালবাবু এর আগে ২০১১ সালে বসিরহাট বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়ে হাজার সাতেক ভোট পেয়েছিলেন। সংখ্যার অনুপাতে যা তেমন জোরদার না হলেও পুরনো নেতা হিসাবে এলাকায় তাঁর পরিচিতি আছে। তিনি জানান, শমীকবাবু বিধায়ক হলেও বসিরহাট, টাকি পুরসভার দখলে তৃণমূল। স্থানীয় সাংসদ তৃণমূলের। সব মিলিয়ে এলাকায় উন্নয়ন করতে চাইলেও বহু বাধা আসবে। সে সবের মধ্যেও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী শমীকবাবু। বললেন, ““বিজেপিই যে এ রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে উঠেছে, এই ফল তারই প্রমাণ।” ১৫ বছর বাদে বিধানসভায় দলকে দ্বিতীয় ইনিংসের খেলায় পৌঁছে দেওয়ার পরে এ কথা বলা তাঁকে মানায় বইকী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy