প্রতীকী ছবি।
সাইকেল আর জুতো দেওয়া হচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরে। তার উপরে রাজ্য সরকার স্কুলপড়ুয়াদের ব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে। বিতর্ক শুরু হয়েছে এমনকী সরকারের অন্দরেও। কেননা এই খাতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা!
বিকাশ ভবনের খবর, সর্বশিক্ষা মিশনের ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, কিছু স্কুলে প্রধান শিক্ষকের ঘর নেই। অনেক স্কুলেই নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম। নেই শৌচালয়। স্কুলের পাঁচিলও নেই। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু স্কুলেই আর্থিক সমস্যা ভয়াবহ। স্কুলবাড়ি, পানীয় জল, শৌচাগারের মতো ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই। সেই অভাব না-ঘুচিয়ে ব্যাগের পিছনে এত টাকা খরচ করা অর্থহীন বলে মনে করছে দফতরের একাংশ। শিক্ষা শিবিরে প্রশ্ন উঠছে, অসংখ্য স্কুলের দৈন্যদশার মধ্যে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬০ লক্ষ পড়ুয়াকে স্কুলব্যাগ দেওয়ার যুক্তি কী?
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফায়দা তোলাই শাসক পক্ষের লক্ষ্য বলে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত। তারা বলছে, স্কুলব্যাগ দেওয়ার পরিকল্পনা ভোটের চমক ছাড়া আর কিছুই নয়।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সস্তার রাজনীতি করা যেতে পারে। কিন্তু এতে শিক্ষার সার্বিক উন্নতি হবে না।’’ একই সুরে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, সরকার তো নিজেরাই তীব্র আর্থিক সঙ্কটের কথা বলছে বারবার। সেটা সত্যি হলে এত টাকা ব্যয় করে স্কুলব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথার্থ হতে পারে না। ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনকে নিশানা করে চটকদারির রাজনীতি করছে সরকার,’’ বলেন স্বপনবাবু।
ব্যাগের আদৌ আর প্রয়োজন আছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। বিকাশ ভবনের একাংশ এই বিষয়ে নীতিগত প্রসঙ্গও তুলেছেন। অফিসারদের একাংশের মতে, সম্প্রতি কর্তাদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, ব্যাগে বই বা খাতা বহনের দিন শেষ। প্রাথমিক স্তরে ব্যাগের বোঝা কমাতে বই-খাতা স্কুলেই রাখার ব্যবস্থা করা হবে। তা হলে ১০০ কোটি টাকা খরচ করে ব্যাগ দেওয়ার উদ্যোগ কেন, উঠছে প্রশ্ন।
স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি নন। সরকারের শীর্ষ স্তরের এই উদ্যোগ সম্পর্কে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy