Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কিষেণজি নই, বলছেন গুরুঙ্গ

মোর্চা সূত্রের মতে, গুরুঙ্গ নিজেও এর আঁচ পেয়েছেন। এবং শুক্রবার সকালে তাঁকে যে পুরনো রুটিনে ফিরে দলীয় দফতর থেকে বিবৃতি দিতে দেখা গিয়েছে, এই চিন্তা তার অন্যতম কারণ হলেও হতে পারে।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৫:০৪
Share: Save:

নিজেকে কিষেণজির সঙ্গে তুলনা করে ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি জঙ্গলমহলের মাওবাদী নেতার মতো পাহাড়েও অন্তরালে থেকে লড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন মোর্চা প্রধান? সে ক্ষেত্রে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সমর্থকদেরও নানা জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মোর্চার অনেক নেতা সখেদে সেটা গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠদের জানিয়েও দিয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসনে থাকা গুরুঙ্গ-অনুগামীরাও উদ্বিগ্ন।

মোর্চা সূত্রের মতে, গুরুঙ্গ নিজেও এর আঁচ পেয়েছেন। এবং শুক্রবার সকালে তাঁকে যে পুরনো রুটিনে ফিরে দলীয় দফতর থেকে বিবৃতি দিতে দেখা গিয়েছে, এই চিন্তা তার অন্যতম কারণ হলেও হতে পারে। এ দিন সিংমারিতে গুরুঙ্গ নিজেই বলেছেন, ‘‘আমি কিন্তু কিষেণজি নই। আমরা মাওবাদী নই। কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে আমাদের যোগও নেই।’’

কয়েক দিন ‘গোপন ডেরা’য় থাকার পরে গত বৃহস্পতিবার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিষেণজির উদাহরণ টানেন গুরুঙ্গ। বলেন, ‘‘অতীতে কিষেণজিকে মেরে ফেলা হয়েছিল। তেমন ষড়যন্ত্রও চলেছে। কিন্তু আমিও সতর্ক রয়েছি।’’ এই মন্তব্যের পরেই শুরু হয় বিতর্ক। কয়েক জন ঘনিষ্ঠ নেতা সরাসরি গুরুঙ্গের কাছেই জানতে চান, তিনি কি কিষেণজির পথেই হাঁটতে চাইছেন?

দলের একাংশ মনে করেন, গুরুঙ্গের ওই মন্তব্যে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল সঙ্কেত গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এক সময়ে জঙ্গলমহলে আত্মগোপন করে কাঁধে বন্দুক নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো মাওবাদী নেতার সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতার আন্দোলনের কোনও মিল নেই। কিষেণজির আন্দোলন ছিল হিংসাত্মক। মোর্চা নেতাদের দাবি, তাঁরা অহিংসার পথে গণতান্ত্রিক লড়াই লড়ছেন। সম্প্রতি মোর্চার বিভিন্ন মিছিলে জাতীয় পতাকা কেন ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোর্চা নেতাদের কৌশল ছিল, জাতীয় পতাকার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পাল্টা আবেগের জিগির তুলে পাহাড়ে সকলকে এক করা যাবে। কিন্তু খোদ দলনেতা নিজেকে কিষেণজির সঙ্গে তুলনা করায় ঠিক উল্টো ফল হবে বলে শঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই নেতারা।

রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের কটাক্ষ, ‘‘তিনি (গুরুঙ্গ) যে পদ্ধতিতে আন্দোলন করছেন, তা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি নয়। সবাই সব জানেন, বোঝেন। আমার কিছু বলার নেই।’’ শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE