Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মঞ্চের চেনা ভিড় এ বার উধাও

হেমতাবাদের ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি পুলিশ ও প্রশাসন। ফলে সোমবার পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে শিমুলিয়ার কালিপুর ফুটবল মাঠের সভাস্থলের চেহারা ছিল অন্য বারের চেয়ে আলাদা।

xকড়াকড়ি: মঞ্চে হাতে গোনা কয়েকজন। বাকিদের বসতে হয়েছিল নীচের ভিআইপি জোনে। নিজস্ব চিত্র।

xকড়াকড়ি: মঞ্চে হাতে গোনা কয়েকজন। বাকিদের বসতে হয়েছিল নীচের ভিআইপি জোনে। নিজস্ব চিত্র।

প্রশান্ত পাল
প্রশান্ত পাল শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

হেমতাবাদের ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি পুলিশ ও প্রশাসন। ফলে সোমবার পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে শিমুলিয়ার কালিপুর ফুটবল মাঠের সভাস্থলের চেহারা ছিল অন্য বারের চেয়ে আলাদা।

কেমন?

কোটশিলার উপরবাটালিতে ১২ ডিসেম্বর সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে বার মঞ্চের উপরেও ভিড় ছিল। বস্তুত, সেটাই ছিল এক প্রকার দস্তুর। এ বার উল্টো। সোমবার মঞ্চে ছিলেন সাত জন বিধায়ক, দুই সাংসদ, জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, কুড়মি উন্নয়ন বোর্ডের দু’জন। আর পুলিশকর্তারা। বাকি সবাই মঞ্চের নীচে, বাঁ দিকে। সেটাই ভিআইপি জোন।

মঞ্চে এ বারে কারা থাকতে পারবেন, তা নিয়ে গত কয়েক দিনে বিস্তর জল্পনা চলেছে তৃণমূলের অন্দরে। প্রশাসনের কোনও কোনও কর্তার কাছে কিছু জনপ্রতিনিধির ফোনও গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন, এ বারে মঞ্চে বসতে পারবেন কি না। কর্তারা অবশ্য কিছু বলতে পারেননি।

সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এই সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে তাঁদের মুখ দেখা না গেলে ভোটাররা কী ভাববেন তা নিয়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের অনেক জনপ্রতিনিধিই ভাবনায় ছিলেন। তবে সভাস্থলে গিয়ে যা দেখলেন, তাতে আর আক্ষেপ করার জায়গা ছিল না। তাবড় নেতারা বসেছেন মঞ্চের নীচে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন খোদ দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসি়ডেন্ট সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মীরা বাউড়ি। পুরসভার চেয়ারম্যানরাও বসেছেন মঞ্চের নীচে।

নীচে মানে ঠিক নীচে নয়। মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের বাইরে অর্ধচন্দ্রের মতো এলাকা জুড়ে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ থাকে। তার পরে শুরু হয় চেয়ারের সারি। মাঝে অনেকটা ফাঁকা জায়গা।

এ বারে সেই ফাঁকা জায়গায় তিন প্রস্ত ব্যারিকেড করা হয়েছিল বাঁশ দিয়ে। খেলার মাঠে গ্যালারির দিকে মুখ করে যেমন পুলিশ থাকে, সভাস্থলেও তেমন ছিল। আর সিসি ক্যামেরায় চলছিল নজরদারি। দর্শকাসনের সামনে সাদা পোশাকে কিছু যুবককে দেখায় যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁরা সিভিক ভলান্টিয়ার।

দর্শদের দিক থেকে প্রথম ব্যারিকেডের সামনে এক গজ দূরে দূরে ছিলেন মহিলা পুলিশ কর্মীরা। যাতে ফাঁক গলে কেউ যাওয়ার চেষ্টা করলেই ধরে ফেলতে পারেন। তার পরের ব্যারিকেডের সামনে প্রায় একই ভাবে পুরুষ পুলিশকর্মীরা। মঞ্চের একেবারে কাছের ব্যারিকেড তুলনায় ফাঁকা। সেখানে পুলিশকর্তারা ওয়াকিটকি হাতে ঘনঘন যাতায়াত করছিলেন। দেখা গেল এসপি জয় বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাসকেও। মঞ্চের উপরে ছিলেন পুলিশের বড়কর্তারা।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে এ বারে যে উঠতে পারলেন না, সেই ব্যাপারে নেতাদের বক্তব্য কী? মীরা বাউড়ি, ‘‘আজ মঞ্চে ওঠা হয়নি। কাল প্রশাসনিক বৈঠকে থাকব। আমাদের জন্য কালকের দিনটা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE