Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

জটিল হচ্ছে ডেঙ্গি, ফের মৃত্যু বাগুইআটিতে

তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামলে কী হবে, ডেঙ্গি বা জ্বর থেকে কিন্তু নিস্তার মিলছে না। বরং ডেঙ্গি কারও কারও ক্ষেত্রে জটিল হয়ে পড়ায় সমস্যা বাড়ছে। সোমবারও বাগুইআটিতে এক মহিলার ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৮
Share: Save:

তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামলে কী হবে, ডেঙ্গি বা জ্বর থেকে কিন্তু নিস্তার মিলছে না। বরং ডেঙ্গি কারও কারও ক্ষেত্রে জটিল হয়ে পড়ায় সমস্যা বাড়ছে। সোমবারও বাগুইআটিতে এক মহিলার ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে।

ডেঙ্গির জীবাণু শরীরে ঢুকে শারীরিক অবস্থাকে কতটা জটিল করে তুলতে পারে, তার উদাহরণ প্রাক্তন ক্রিকেটার স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ডেঙ্গি আক্রান্ত স্নেহাশিস। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর প্লেটলেট ২০ হাজারের নীচে নেমেছে। লিভারেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। পেটে অল্প জলও জমেছে।

তবে এখনই প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদার অবস্থাকে সঙ্কটজনক বলছেন না চিকিৎসকেরা। এক চিকিৎসকের বক্তব্য, ডেঙ্গির জীবাণু লিভারের কোষকে নষ্ট করে দেয়। কারও কারও ক্ষেত্রে সমস্যাটা প্রকট হয়। স্নেহাশিসের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে। এক চিকিৎসকের মন্তব্য, ‘‘এখনও সঙ্কটজনক বলার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।’’

চিকিৎসকদের অবশ্য চিন্তায় ফেলেছে বিধাননগর পুর এলাকার বাগুইআটি। গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গিতে এই এলাকায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বাগুইআটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অশ্বিনীনগরের বাসিন্দা পাপিয়া চক্রবর্তীর (৫৪)। তিনি ১২ দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হন বলে তাঁর আত্মীয়েরা জানিয়েছেন। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘হেমারেজিক ডেঙ্গি ফিভার’ লেখা হয়েছে।

শুক্রবারই বাগুইআটির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর নতুন কলোনির বাসিন্দা সরকারি কর্মী রমেশ বারুইয়ের মৃত্যু হয়। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি জ্বর লেখা হয়েছে।

বাগুইআটিতে জুলাই মাস থেকে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় ঝুঁকি না নিয়ে বাসিন্দারা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে পথে নেমে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছিলেন। এই ওয়ার্ডেই সচেতনতা ফেরাতে মশারির মধ্যে বসে বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়েছিল। এ দিনও ওই ওয়ার্ডে সচেতনতা ফেরাতে বাড়ি বাড়ি মশারি সরবরাহ করা হয়েছে।

পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘জোর কদমে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হচ্ছে। ওয়ার্ডে মশা নিয়ন্ত্রণের দল, পুরসভার কেন্দ্রীয় দল এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স একযোগে কাজ করছে। জমা জল সরানো হয়েছে।’’ এ সবের পরেও কেন পরপর জ্বরে আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে, তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বিধাননগর পুর প্রশাসন।

যদিও মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি কতটা অসাড়, তা এ দিনই রাজ্য সরকারের একটি দফতরের গুদাম পরিদর্শনের সময়ে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি গুদামে বিপুল পরিমাণে মশার লার্ভার সন্ধান পেয়েছেন পুরকর্মীরা।

বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘যে সময়ে অন্যান্য জায়গায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে, তখন বাগুইআটি এলাকায় ফের মৃত্যুর ঘটনা চিন্তা বাড়াচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE