মহিষদার বাড়িতে শক্তিপদবাবু।
দু’দিন আগেই শাসক দলের নেতারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপরেও দেবের জ্যাঠা, সিপিএম নেতা শক্তিপদ অধিকারীর জমিতে ফের চাষে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
কেশপুরের মহিষদার বাসিন্দা, সিপিএমের কেশপুর জোনাল কমিটির সদস্য শক্তিপদবাবু গত মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা তাঁর ছ’বিঘা জমিতে চাষ না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিষয়টি জেনে হস্তক্ষেপ করেন দেব নিজে। তিনি জ্যাঠার ছেলে সুজিত অধিকারীকে ফোন করেন। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের সঙ্গেও দেবের কথা হয় বলে সুজিতবাবুর দাবি। এরপরই তৃণমূলের তরফে চাষের কাজে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস মেলে।
বুধবারের সেই আশ্বাসের পরে শুক্রবারই প্রথম চাষ শুরু হয় শক্তিপদবাবুর জমিতে। বিকেলে ‘পাওয়ার টিলার’ নিয়ে হাল দিতে গিয়েছিলেন দুই দিনমজুর। অভিযোগ, রাতে ওই দু’জনকে ডেকে তৃণমূলের কিছু কর্মী মারধর করে। প্রহৃতেরা অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন। পুলিশেও অভিযোগ জানাননি। তবে শক্তিপদবাবুর দাবি, ‘‘আমাদের জমিতে হাল দেওয়ার জন্য দু’জনকে মারধর করেছে তৃণমূলের লোকেরা। ওদের কাছে তৃণমূলের ছেলেরা জবাবদিহিও চায়।” তাঁর ছেলে সুজিত জানান, এই ঘটনা নিয়েও শনিবার দেবের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার জোরজুলুম বন্ধ করার বার্তা দিচ্ছেন দলীয় কর্মীদের। এই ধরনের অভিযোগ পেলে প্রশাসনকেও কড়া হতে নির্দেশ দিচ্ছেন। তারপরেও দেবের মতো তারকা সাংসদের পরিজনকে বারবার চাষের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় শাসক দলের নাম জড়ানোয় আলোড়ন পড়েছে। তা ছাড়া, শক্তিপদবাবুকে যে ছ’বিঘা জমিতে চাষ বন্ধের ফতোয়া দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ, তার মধ্যে তিন বিঘা আবার দেবের বাবা গুরুপদ অধিকারীর। ফলে, সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল। বিষয়টিতে রাশ টানতে তাঁরা তৎপরও হয়েছেন।
তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি শনিবার বলেন, ‘‘মহিষদায় একটা সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। দলের ব্লক সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে হবে। প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে থেকে চাষে সাহায্য করতে হবে।”
নির্দেশমতো এ দিন সন্ধ্যায় মহিষদার তৃণমূল কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন সুজিতবাবু। শুক্রবারের মারধরের কথা অবশ্য মানছেন না সঞ্জয়। তাঁর দাবি, “কাউকে মারধর করা হয়নি। সামান্য বচসা হয়ে থাকতে পারে। তবে তা-ও কাম্য নয়।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘শক্তিপদবাবু নিশ্চিন্তে চাষ শুরু করতে পারেন।’’
বৈঠক শেষে শক্তিপদবাবুর ছেলে সুজিতেরও বক্তব্য, “ওরা (তৃণমূল) আশ্বস্ত করেছে। আশা করি, আর সমস্যা হবে না।”
নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy