Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সমদূরত্ব কিছু নেই, স্পষ্ট কথা সূর্যের

কয়েক দিন আগেই কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে এসে ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব বলে গিয়েছিলেন, বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার এখন দেশে যে পরিমণ্ডল তৈরি করেছে, তা আগে কখনও হয়নি।

সূর্যকান্ত মিশ্র।

সূর্যকান্ত মিশ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

দেশের সংবিধানেরও কাঠামো বদলে ফেলার হুমকি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিপদ এখন আগের তুলনায় বহু গুণ বেশি। এমতাবস্থায় তাত্ত্বিক তর্ক দূরে সরিয়ে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ব্যাপকতম ঐক্যই জরুরি বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল বাংলার সিপিএম। কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বসার আগে এমন অবস্থান যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ।

কয়েক দিন আগেই কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে এসে ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব বলে গিয়েছিলেন, বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার এখন দেশে যে পরিমণ্ডল তৈরি করেছে, তা আগে কখনও হয়নি। এমন ‘ফ্যাসিবাদী’ তাণ্ডবের মোকাবিলায় বাছবিচার না করে সব ধরনের গণতান্ত্রিক শক্তিকে সংহত করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি। দলের বাংলা মুখপত্রের ৫১তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বুধবার ওই একই মঞ্চ থেকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের গলায় প্রায় হাবিবেরই প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে। সূর্যবাবুরও যুক্তি, ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি নিয়ে মানুষে মানুষে যে ভাবে বিবাদ বাধাচ্ছে গেরুয়া শিবির, তার মোকাবিলায় জোট বাঁধতেই হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এই বিপদ রুখতে ব্যাপকতম শক্তির সমাবেশ ঘটাতেই হবে। বিপক্ষে যারা দাঁড়াচ্ছি, তারা সবাই এক শ্রেণি বা এক জায়গা থেকে আসিনি। তাই নিজেদের মধ্যে কিছু পার্থক্য তো থাকবেই। কিন্তু বড় বিপদকে রুখে তার পরে সে সব নিয়ে আলোচনা করা যাবে।’’

কংগ্রেসের চেয়ে বিজেপি অনেক বেশি বিপজ্জনক শক্তি, এই যুক্তি সিপিএমের অন্দরে এখন মেনে নিয়েছেন প্রকাশ কারাটেরাও। বিজেপি-র মোকাবিলায় কংগ্রেস-সঙ্গ কত দূর সঙ্গত, বিতর্ক এখন মূলত সেই প্রশ্নেই। শ্রেণি রাজনীতির যুক্তি এবং উদার অর্থনীতির প্রশ্নে ক‌ংগ্রেস ও বিজেপি-র ফারাক না থাকার কথা বলে বামেদের একাংশ রাহুল গাঁধীর দলের থেকে দূরে থাকারই পক্ষে। কিন্তু সূর্যবাবু এ দিন এক ধাপ এগিয়ে যুক্তি দিয়েছেন, বিজেপি-র বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির একমঞ্চে আসা দরকার। কার নীতির সঙ্গে কার কতটা ফারাক, সেই তর্কের মীমাংসা বরং অপেক্ষা করতে পারে!

বস্তুত, সূর্যবাবু এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘সমদূরত্বের কথা বলার কেউ দিল্লিতে বা বাংলায় নেই। এটাও এক ধরনের ‘সত্য নির্মাণ’! দলের মধ্যে বিতর্ক বাধানোর জন্য এমন একটা প্রচার চলছে।’’ কেউ কেউ বলছেন, বাংলায় বরং সিপিএম সমদূরত্বের লাইন রেখেছে বিজেপি ও তৃণমূলের থেকে। সেই তত্ত্বও খারিজ করে সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘গ্রামবাংলার ভাষায় বললে, দু’টো মুখ থাকলেও সাপ তো একটাই। সাপটা না মরলে একটা মাথায় মেরে বিপদ থেকে বাঁচা যাবে না!’’ সরকারি আনুকূল্য ছাড়াই মুখপত্র চালানোর চ্যালেঞ্জ নেওয়ার কথা বলেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE