বিমল গুরুঙ্গ।
তাঁর পাতলেবাসের বাড়িতে ঢুকলে সামনেই বিরাট চত্বর। সাত মাস আগে প্রায় রোজ সকালে সেখানে বসতো দরবার। তিনি হাজির হলে সসম্ভ্রমে অভিবাদন জানাতেন উপস্থিত মানুষেরা। আজ সেই বিমল গুরুঙ্গ নেই। পাতলেবাসের বাড়িও তাই কার্যত ‘খণ্ডহর’। অভিযোগ, সেই তালাবন্ধ বাড়িতে এখন মাঝেমধ্যেই হানা দিচ্ছে ছিঁচকে চোরের দল। কখনও হাওয়া হয়ে যাচ্ছে বৈঠকখানার বেঞ্চ-চেয়ার, কখনও বাড়ির মধ্যে থেকে দামি বাসনকোসন। দেখে কট্টরপন্থীরা একান্ত আলোচনায় আফসোস করছেন, কোন তলানিতে ঠেকেছে গুরুঙ্গের প্রতি সম্ভ্রম, সমীহ!
গুরুঙ্গের বাড়িতে চুরির অভিযোগ মুখে মুখে পরিচিত পুলিশকর্মীদের কাছে জানালেও, লিখিত ভাবে অভিযোগ এখনও করেননি কট্টরপন্থীরা। বরং বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপাদের সে কথা চুপি চুপি জানিয়ে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। কেউ আবার পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের বাড়ি গিয়ে এ সব গল্প শুনিয়ে আসছেন।
এক পুলিশকর্তা জানান, মাঝেমধ্যে লোকজন যে জিনিসপত্র নিয়ে যায়, সে খবর তাঁরাও পেয়েছেন। কিন্তু স্থানীয়দের থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হলেও কেউ উৎসাহ দেয়নি। তাঁর কথায়, দিনের বেলা পাতলেবাসের বাড়ির সামনে পুলিশ টহল দেয়। কিন্তু রাতভর নজর রাখা তো সম্ভব নয়। বিনয় তামাঙ্গের কথায়, বাড়িতে বহু মাস কেউ না থাকলে এর চেয়ে ভাল আর কী হবে!
সব দেখেশুনে বিভিন্ন মহলে আলোচনা, গুরুঙ্গ কি তা হলে পাহাড়ের মন থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন? মোর্চারই একটি অংশ বলছে, বন্ধ উঠে যাওয়ার পর থেকে মানুষ চাইছিল শীঘ্রই সব স্বাভাবিক হোক। তার পরে রাজ্য সরকার যে ভাবে দ্রুত জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ড গড়ে পাহাড়ের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে, তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। স্বাভাবিক কাজ শুরু হওয়ার পরে এখন গুরুঙ্গের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তিনি আবার ফিরে এসে হাল ধরুন— এমন কথা কাউকেই জোর গলায় বলতে শোনা যাচ্ছে না।
গুরুঙ্গের এক আইনজীবী জানান, রাজ্যের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র মামলা করেছেন বিমল, জানুয়ারির মাঝামাঝি তার চূড়ান্ত পর্বের শুনানি হওয়ার কথা। তাই মেপে পা ফেলছেন তিনি। তাঁর অনুগামীদের একাংশের দাবি, নানা কৌশলে গুরুঙ্গ দিল্লি অবধি পৌঁছে নিরাপদেই রয়েছেন। আরেক পক্ষ অবশ্য বলছেন, গুরুঙ্গ সিংলা-নামচির মাঝামাঝি জঙ্গলেই রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy