Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় ১১ লক্ষ ছাত্রছাত্রী

রাজ্যে এসএসকে (চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত) রয়েছে ১৬ হাজার। এমএসকে (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) ২৫০০। দু’ধরনের স্কুলই চালায় পঞ্চায়েত দফতর। স্কুলগুলিকে শিক্ষা দফতরের অধীনে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৪
Share: Save:

ওরাও স্কুলের ছাত্রছাত্রী। কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায়!

ওদের কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়। কন্যাশ্রীর সুবিধা পেলেও অনেকেরই লাভ হয় না। মাধ্যমিকও দিতে পারে না বেশির ভাগ। তারা স্কুলছুট হয়ে যায়। ওরা রাজ্যের শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (এমএসকে) গরিব ঘরের ১১ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। যাদের কোনও দায়িত্ব নেয় না শিক্ষা দফতর।

রাজ্যে এসএসকে (চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত) রয়েছে ১৬ হাজার। এমএসকে (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) ২৫০০। দু’ধরনের স্কুলই চালায় পঞ্চায়েত দফতর। স্কুলগুলিকে শিক্ষা দফতরের অধীনে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওই বছর রাজ্য মন্ত্রিসভায় এ বিষয়ে প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়। এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র তার পরই শিক্ষা দফতরকে দেওয়া হয় বলে দাবি পঞ্চায়েত কর্তাদের। কিন্তু এখনও স্কুলগুলিকে শিক্ষা দফতরের অধীনে আনা হয়নি। অভিভাবকদের অনেকেরই অভিযোগ, তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে।

কিন্তু কেন? দু’ধরনের স্কুলই তৈরি হয় নব্বইয়ের দশকের শেষে। যে সব গ্রামে এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও প্রাথমিক স্কুল নেই, সেখানে এসএসকে এবং যে সব এলাকায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনও হাইস্কুল নেই, সেখানে এমএসকে খোলা হয়। শিক্ষকদের বেতন, পড়ুয়াদের বই, পোশাক, জুতো কেনা এবং মিড-ডে মিলের টাকা অবশ্য কেন্দ্র দেয় সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পে। তারা টাকা পাঠায় শিক্ষা দফতরে। শিক্ষা দফতর পঞ্চায়েতে ওই টাকা পাঠায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ওই টাকা প্রায়ই মেলে না এবং তার ফলে পড়াশোনার সরঞ্জাম কিনতেও দেরি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে পঞ্চায়েত দফতরের। দীর্ঘদিন নিয়োগ না-হওয়ায় স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাবও রয়েছে।

তবু এ সবের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কিন্তু তাঁদের বড় সমস্যা হয় ছেলেমেয়ে অষ্টম শ্রেণি পাশ করলে। কাছাকাছি হাইস্কুল না-থাকায় অনেক ছাত্রছাত্রীই নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় না। ফলে, তাদের পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়। কিছু ছাত্রীকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পরে সে এক বছরের জন্য কন্যাশ্রীর সুবিধা পেলেও লাভ হয় না বলে জানিয়েছেন অনেক অভিভাবক। ‘এমএসকে-এসএসকে যৌথ সংগ্রাম কমিটি’র রাজ্য সম্পাদক মোকলেসুর রহমান বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরের অধীনে না-এলে এই স্কুলগুলিতে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পঠনপাঠন চালানো সম্ভব নয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অনুমতি দেবে না।’’

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে আর কিছু করণীয় নেই। এখন বল শিক্ষা দফতরের কোর্টে।’’ শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, ওই দফতরেরই কেউ কেউ মনে করছেন, এমএসকে-এসএসকেগুলির দায়িত্ব নিলে সেখানে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে, পরিকাঠামো ঢেলে সাজতে হবে।
ঝক্কি অনেক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE