উত্তরে গেরুয়া ঝড় তোলার পর বাংলায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের অভিযানে আজ, মঙ্গলবার নতুন করে নামছেন তিনি। তার আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ দলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আর যা-ই হোক, অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত বা নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের কোনও নেতাকে বিজেপিতে নেবেন না তিনি। স্থানীয় ভাবে জনপ্রিয় বা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কোনও তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে চাইলে অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনও দাগি নেতা নৈব নৈব চ!
কয়েক মাস ধরেই বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা দাবি করছেন, তলে তলে তৃণমূলের অনেক নেতাই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সোমবার এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে, অমিতের অন্যতম সেনাপতি তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, বাংলায় শাসক দলের অনেক নেতাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে অমিতজি আমাকে একটা বিষয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সারদা বা নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত কাউকেই দলে নেওয়া যাবে না। তবে অন্যদের প্রস্তাব ভেবে দেখা যেতে পারে।’’ সূত্রের খবর, রাজ্য সফরে এসে এই কথাটা খোলাখুলি ঘোষণাও করে দিতে পারেন অমিত শাহ।
তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতার বিজেপিতে সামিল হওয়া নিয়ে জল্পনা নতুন নয়। সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়া দুই তৃণমূল নেতা দিল্লিতে গিয়ে অমিত এবং আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেই ঘটনা তৃণমূল ও বিজেপি মহলে আর গোপন নেই। তার পরে সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের গতি কমে আসায় কংগ্রেস-বামেরা ‘মোদীভাই-দিদিভাই’ আঁতাঁতের অভিযোগ তোলার সুযোগ পেয়েছে।
প্রশ্ন হল, কী কারণে এই অবস্থান নিচ্ছেন বিজেপি সভাপতি? রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ২০১৪-র পরে বিজেপির উপরে বিশ্বাস জন্মাতে শুরু করেছিল এ রাজ্যে অনেকেরই। পরে সংসদীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় তৃণমূলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমঝোতা দেখে সেই আস্থায় ভাটা পড়ে। শাহের এখন মূল লক্ষ্য হল, আবার সেই বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরে পাওয়া। সেই জন্যই এই অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
এতে বিজেপির রাজ্য নেতারা খুশি। এক নেতা বলেন, অনেকের বক্তব্য ছিল, বাংলায় বিজেপির কোনও জুতসই মুখ নেই। কিন্তু কৈলাসজিরা মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটে লড়ার জন্য স্থানীয় মুখই যথেষ্ট। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে মোদীই মুখ থাকবেন। এই দুই ভোটে সাফল্য পেলে বিধানসভা ভোটের আগে আর ধার করা মুখের প্রয়োজন হবে না।
এ দিকে, বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা কমে আসায় সারদা-নারদ নিয়ে আইনি পথে হাঁটার তোড়জোড় করছেন তৃণমূলের অভিযুক্ত নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy