Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বাংলা ঝালিয়ে আজ বঙ্গে আসছেন অমিত

নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। বিজেপি চাইছে, পশ্চিমবঙ্গকে সেই রথে সহযাত্রী করতে। কাল শিলিগুড়ি পৌঁছনোর আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের প্রধান বার্তা এটাই।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:৩৩
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। বিজেপি চাইছে, পশ্চিমবঙ্গকে সেই রথে সহযাত্রী করতে। কাল শিলিগুড়ি পৌঁছনোর আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের প্রধান বার্তা এটাই।

কাল শিলিগুড়ি থেকে অমিতের বঙ্গ অভিযান শুরু। সভাপতি হওয়ার পর তিনি বাংলা বই কিনে বাংলা শিখতে শুরু করছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশ-সহ বেশ কিছু রাজ্যের নির্বাচন এসে যাওয়ায় বাংলা শেখা থমকে গিয়েছিল। আবার তিনি পূর্ণোদ্যমে বাংলা শেখার কাজ শুরু করেছেন। সম্প্রতি দিল্লিতে বৈঠক করে রাজ্য নেতাদের অমিত জানিয়েছেন, এ দেশের কিছু বামপন্থী ও তৃণমূলপন্থী মেকি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী লোকজন বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলে। কিন্তু আসলে তারাই এ দেশের সনাতন হিন্দু আদর্শ ভুলতে বসেছে। কাল উত্তরবঙ্গে জেলা সভাপতিদের সঙ্গেও সরাসরি বৈঠক করবেন তিনি। পরের দিন মমতার কেন্দ্র ভবানীপুরে গিয়েও বুথ কর্মীদের সঙ্গে সভা করবেন।

অমিতের সফরের হাওয়া তুলতে আজ দিল্লিতে দলের দফতরে নামানো হয় মোদী সরকারের মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। ক’দিন আগেই যিনি পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক হাত নিয়েছেন। স্মৃতি বলেন, ‘‘নকশালবাড়ির বুথ নম্বর ৯৩ থেকে অমিত শাহ কাল সফর শুরু করছেন। নকশালবাড়ি বেছে নেওয়ার কারণ সেটা লাল হিংসার প্রতীক। পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা হিংসার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা নিয়েই সফর শুরু হবে।’’ অমিতের সফর তালিকায় প্রথমেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আগামী পনেরো দিনে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ওড়িশা, কেরল, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানার মতো রাজ্যে দলের প্রসারে জোর দেওয়া হবে, যেখানে বিজেপির সংগঠন দুর্বল। দলের প্রসারের লক্ষ্যে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কর্মীকে বাছা হয়েছে। এই বুথওয়াড়ি সফরে অমিত নিজে বুথে গিয়ে সংগঠনের হাল-হকিকত খতিয়ে দেখবেন। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। কেন্দ্রের প্রকল্প বোঝাবেন। দলের উপর কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা-ও শুনবেন।

তিন দিনের এই পশ্চিমবঙ্গ সফরে অমিত শাহ যে তিনটি বিষয়ের উপরে মূলত জোর দিতে চাইছেন, তা হল:

১। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমঝোতার কোনও সম্ভাবনাই নেই।

২। সারদা ও নারদ নিয়ে কোনও আপসের লাইন বিজেপি নেবে না।

৩। রাম মন্দির নির্মাণ বা হনুমানজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে অগ্রাধিকার না দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে গুরুত্ব দেওয়া। ইতিমধ্যেই বাঙালিদের নিয়ে বেশ কিছু বৈঠক হয়েছে দিল্লিতে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রচনাবলী প্রকাশ থেকে শুরু করে বঙ্কিমচন্দ্র, নেতাজি, স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনা-চিন্তাকে জনপ্রিয় করে তোলাই হবে এখন বিজেপির সাংস্কৃতিক লক্ষ্য।

মেদিনীপুরে দলের ভাল ফলাফলের পর বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে চায়। অমিত শাহ মনে করছেন, যে রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট এবং যে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু তোষণে সক্রিয় রয়েছেন, সেই রাজ্যে বিজেপির প্রধান শক্তি হয়ে ওঠা শুধু সময়ের অপেক্ষা। অসমে যে ভাবে বিজেপি সফল হয়েছে, ঠিক সে ভাবে পশ্চিমবঙ্গে সফল হওয়াই অমিতের লক্ষ্য। পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে তার সেমিফাইনাল।

এই সব লক্ষ্য নিয়েই অমিত শাহের বঙ্গ অভিযানের এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Amit Shah BJP President BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE